মিছিলে শামিল পড়ুয়ারা। শ্রীরামপুরে। নিজস্ব চিত্র ।
তিন সপ্তাহ পার। পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। তবুও আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর খুন ও ধর্ষণের ঘটনার অগ্রগতি নিয়ে নানা প্রশ্ন জনমানসে। ঘটনার নৃশংসতায় ওই কাণ্ডের পর থেকেই কার্যত গোটা রাজ্য জুড়ে পথে নামেন সাধারণ মানুষ। দ্রুত বিচার এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার
দাবিতে সেই নাগরিক আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়নি। শনিবারেও হুগলি জেলার একাধিক জায়গায় পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। শামিল
স্কুল পড়ুয়ারা থেকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষও।
বাংলায় মেয়েদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে শ্রীরামপুর মিশন স্কুলের অবদান অপরিসীম। এ দিন সেই মিশন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের উদ্যোগে মৌনী মিছিল হল। ছুটির পরে বিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। টি সি গোস্বামী স্ট্রিট, ঋষি বঙ্কিম সরণি, ধর্মতলা হয়ে ক্ষেত্র সা মেলাবাড়ি, শ্রীরামপুর থানার পাশ দিয়ে গিয়ে স্কুলের সামনেই শেষ হয়। বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন
ছাত্রী, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষিকারা উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রীদের অভিভাবকেরাও মিছিলে হাঁটেন। বিদ্যালয়ের সভাপতি জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, প্রধান শিক্ষিকা সোনালি চক্রবর্তীর পাশাপাশি একাধিক প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকাও যোগ দেন।
ওই বিদ্যালয় সূত্রের দাবি, ছাত্রীরা কেউ বিদ্যালয়ের পোশাক পরে মিছিলে হাঁটেনি। অধিকাংশের পরনে ছিল সাদা সালোয়ার-কামিজ়। মুখে কালো রঙের মাস্ক। হাতে প্ল্যাকার্ড। ন্যায় বিচারের পাশাপাশি ধর্ষণের অপরাধীর ফাঁসির দাবি জানানো হয় প্ল্যাকার্ডে।
বিকেলে উত্তরপাড়ার ‘অনুভূতি’ এবং কানাইপুরের বাঁশাই কলোনির ‘প্রচেষ্টা’ নামে দু’টি সংস্থা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের নিয়ে মিছিল করে। মিছিলটি কানাইপুর থেকে কোন্নগর স্টেশন পর্যন্ত যায়। মিছিলকারীদের হাতে ছিল পোস্টার। ট্রাই-সাইকেল নিয়ে মহিলাদেরও দেখা গিয়েছে মিছিলে।
শনিবার সন্ধ্যায় ‘আমাদের বৈদ্যবাটী’ নামে একটি সমাজমাধ্যম গ্রুপের উদ্যোগে মিছিল হয়। বৈদ্যবাটীর জোড়া অশ্বত্থতলা থেকে জি টি রোড ধরে বেঙ্গল কোল্ড স্টোরেজের সামনে পর্যন্ত ওই মিছিলে বহু মানুষ প্লাকার্ড হাতে যোগ দেন।
শুক্রবার রাতে উত্তরপাড়ার গৌরী সিনেমার সামনে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সভা হয়। শহরের প্রখ্যাত চিকিৎসক, শিক্ষক-সহ বহু বিশিষ্ট মানুষ বক্তব্য পেশ করেন। শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সদস্যেরা গান, আবৃত্তি-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন। ওই সন্ধ্যায় চন্দননগরের পাদ্রিপাড়ার ডোমপুকুর এলাকায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় মানুষজন। শহরের বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য পেশ করেন। নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।