—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের প্রেক্ষিতে হকারদের সংখ্যা গোনার প্রক্রিয়া শুরু হল হুগলির শহরাঞ্চলে। এ নিয়ে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় থাকা ১১টি পুরসভার পুরপ্রধান, এগ্জ়িকিউটিভ অফিসারদের সঙ্গে সোমবার দুপুরে বৈঠক করলেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য। পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
জেলাশাসক জানান, কমিশনারেট এলাকায় শহরগুলিতে হকারদের সঠিক পরিসংখ্যান জানতেই এই বৈঠক। ওই সব শহরে কোথায় কোথায় অবৈধ দোকানপাটের জন্য যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে, তারও একটি ধারণা পাওয়া গিয়েছে। সব কিছুর উপরে ভিত্তি করে এই সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের রূপরেখা তৈরি করা হবে। ওই ১১টি পুরসভা হল বাঁশবেড়িয়া, চুঁচুড়া, চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর, চাঁপদানি, বৈদ্যবাটী, শ্রীরামপুর, রিষড়া, কোন্নগর, উত্তরপাড়া-কোতরং এবং ডানকুনি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিন জেলাশাসক কার্যালয়ে ওই বৈঠকে পুরসভার প্রতিনিধি নিজেদের এলাকা সম্পর্কে অবহিত করেন। আগামী ২০ তারিখ হকারদের নিয়ে বৈঠক
করবে জেলা প্রশাসন। চুঁচুড়ার পুরপ্রধান অমিত রায় বলেন, ‘‘হকার উচ্ছেদ আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তবে রাস্তার পাশে জাঁকিয়ে বসে থাকলে হবে না। সর্বাধিক ঠেলাগাড়ি নিয়ে ব্যবসা চলতে পারে। দোকান বন্ধ হলে রাস্তার পাশে সামগ্রী রেখে যাওয়া চলবে না।’’ সে ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও সরকারি ভাবে পণ্যসামগ্রী রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলে তিনি জানান।
হুগলিতে হকার সমস্যা নতুন নয়। বিশেষত চুঁচুড়া, চাঁপদানি, ভদ্রেশ্বর, শ্রীরামপুর, রিষড়া, উত্তরপাড়ার মতো ঘিঞ্জি পুর এলাকায় রাস্তাঘাটের পাশাপাশি ফুটপাতের বড় অংশও হকারদের দখলে। শুধু গুমটি বা প্লাস্টিকের ছাউনি নয়, সরকারি জায়গায় পাকা দোকানও তৈরি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে অবৈধ সেই
সমস্ত দোকান চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে টোটো নিয়ন্ত্রণে আনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
হকার উচ্ছেদের বিরুদ্ধে এ দিন চন্দননগরে মিছিল করে বাম শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ। পুরসভায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হকারদের উপড়ে ফেলার কথা মুখ্যমন্ত্রী বলেননি। তবে সাধারণ মানুষের সমস্যা করে রাস্তার দখল নেওয়া যাবে না।’’
হাওড়া জেলা জুড়েও শুরু হল সমীক্ষা। উলুবেড়িয়া পুরসভার তরফে এলাকায় কত জন হকার আছেন, তাঁদের মধ্যে কত জন সরকারি জমি দখল করে ব্যবসা করছেন— সবই খতিয়ে দেখা হয়। পুরপ্রধান অভয় দাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশিকা মেনে এক মাসের মধ্যে সমীক্ষার কাজ শেষ করে রিপোর্ট জমা দিয়ে দেব।’’ জগৎবল্লভপুরেও হকার সমীক্ষার কাজ শুরু করল ব্লক প্রশাসন। এ দিন শঙ্করহাটি-১ পঞ্চায়েতের মুন্সিরহাটের চাঁদনি মোড় থেকে কাজ শুরু হয়। জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রঞ্জন কুন্ডু। তিনি বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমীক্ষার কাজ শেষ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’