মৃত ছাত্র কৌস্তভ সাধু। — নিজস্ব চিত্র।
ভিন্রাজ্যে পড়তে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হল বাংলার এক ছাত্রের। তবে তাঁর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলল পরিবার। কী ভাবে মৃত্যু হল, তদন্ত করে দেখার দাবি জানাল তারা। তবে মৃতের বন্ধুদের দাবি, বাঁধের জলে পড়ে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
মৃতের নাম কৌস্তভ সাধু (২৩)। হুগলির গুড়াপ থানার খাজুরদহ মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্গাপুর গ্রামে বাড়ি তাঁর। স্থানীয় সূত্রে খবর, ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলেন কৌস্তভ। এ রাজ্যের কলেজ থেকে বিএসসি পাশ করার পর ছত্তীসগঢ় গিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার জন্য। সেখানকার বিলাসপুর গুরু ঘাসিদাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর করছিলেন কৌস্তভ। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ভর্তি হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেপ্টেম্বরেই ছিল ফাইনাল পরীক্ষা। তার পর বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর।
মৃতের মা সোমা সাধু কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘গত কাল (রবিবার) সকাল দশটায় এক বন্ধুর জন্মদিনে রতনপুর বাঁধে ঘুরতে গিয়েছিল কৌস্তভ। শনিবার রাতেই আমাকে রাতে ফোন করে বলেছিল ওখানে ঘুরতে যাওয়ার কথা। আমি বারণ করেছিলাম। বলেছিলাম, তুই সাঁতার জানিস না। জলের কাছে যাস না। কিন্তু আমার কথা শুনল না।’’
কৌস্তভের বাবা কাশীনাথ সাধু বলেন, ‘‘বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিল। সেখানে ঠিক কী হয়েছিল জানি না। গুড়াপ থানা থেকে রবিবার বিকেলে খবর দেয় আমাদের ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।’’ বলতেই বলতেই কেঁদে ফেলেন তিনি। কৌস্তভের এক আত্মীয় মিন্টু সাধু বলেন, ‘‘পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভিন্রাজ্যে পড়তে গিয়েছিল কৌস্তভ। কিন্তু মর্মান্তিক পরিণতি হল। ওকে খুন করা হয়েছে, না কি অন্য কারণে মৃত্যু হল, তদন্ত হওয়া দরকার।’’
বিলাপপুর থেকে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার দূরে রতনপুরে খুটাঘাট বাঁধ। বর্ষার সময় ওই বাঁধ জলে ভরে থাকে। সেখানেই বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন কৌস্তভ। হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছত্তীসগঢ় থেকে গুড়াপ থানায় খবর আসে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে কৌস্তভের। পরিবারকে তা জানানো হয়। তারা মৃতদেহ আনতে ছত্তীসগঢ়ে গিয়েছে। পরিবার যদি কোনও অভিযোগ করে, তা খতিয়ে দেখা হবে।