ডানকুনির হাউজ়িং মোড়ে সভা করলেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদাদের একাংশ। ছবি: দীপঙ্কর দে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর মুক্তির দাবিতে রবিবার হুগলির ডানকুনির হাউজ়িং মোড়ে সভা করলেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদাদের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকারকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় সভা থেকে।
সভায় পিরজাদা কাশেম সিদ্দিকী বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে নওশাদকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। ওই দিন আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে হবে। নওশাদ মুক্তি না পেলে সে দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পারবেন, বাংলার মানুষ কী করতে পারেন! সে দিন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে।’’
গত ২১ জানুয়ারি কলকাতার ধর্মতলায় আইএসএফের কর্মসূচিতে পুলিশের উপরে হামলা, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর-সহ নানা অভিযোগে নওশাদ-সহ ওই দলের কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নওশাদ-সহ ১৮ জনকে নিঃশর্ত মুক্তির পাশাপাশি ওই ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করা হয় ডানকুনির সভা থেকে। নওশাদ নিজেও পিরজাদা। তাঁর বাড়ি ফুরফুরা শরিফে।
সভায় পিরজাদা কাশেম সিদ্দিকী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পিরজাদা ইব্রাহিম সিদ্দিকী, সাফেরি সিদ্দিকী এবং সিপিএমের আইনজীবী-নেতা সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। পিরজাদা সাফেরি সিদ্দিকী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার অনৈতিক ভাবে নওশাদ সিদ্দিকীকে গ্রেফতার করেছে। দেশের আইন সকলের ক্ষেত্রে সমান। তৃণমূল করার জন্য আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়নি।’’
সায়ন বলেন, ‘‘বর্তমানে তিন বিধায়ক জেলে রয়েছেন। তৃণমূলের পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য এবং আইএসএফের নওশাদ সিদ্দিকী। প্রথম দু’জন মানুষের কোটি কোটি চুরি করে জেলে গিয়েছেন। নওশাদ জেলে গিয়েছেন প্রতিবাদ করতে গিয়ে। নওশাদ সিদ্দিকীরা না কি সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছেন! দিদি আর মোদী সরকারি সম্পত্তি জলের দলে বেচে দিচ্ছেন। তার বেলা? যিনি সংবিধানের বই হাতে নিয়ে বিধানসভা ভাঙচুর করেছিলেন, তাঁর বা তাঁদের কাছ থেকে শিখতে হবে?’’
গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশ-প্রশাসন বিষয়টি দেখছে।’’
পিরজাদাদের একাংশ জানান, আগামী বুধবার নওশাদকে ফের আদালতে তোলার কথা। ওই দিন তাঁরা কলকাতায় যাবেন। এ দিনের সভাকে কেন্দ্র করে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। আনা হয়েছিল জলকামান। তবে, কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হয়নি।