মৃত হারাধন শীলের (ইনসেটে) বাড়ির সামনে এলাকাবাসী। নিজস্ব চিত্র।
বড়দিনের রাতে ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় চুঁচুড়ার শান্তি পল্লির কাছে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক যুবক। ভারী কিছু দিয়ে হামলাকারী দুই মদ্যপ যুবক তাঁর মাথায় ও ঘাড়ে আঘাত করেছিল বলে অভিযোগ। হারাধান শীল (৩৮) নামে জখম ওই যুবক কলকাতার একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার বিকেলে তিনি মারা যান।
এই মৃত্যুর খবর ছড়াতেই সন্ধ্যায় চুঁচুড়ার ২ নম্বর কাপাসডাঙা এলাকায় শোরগোল পড়ে। সেখানেই হারাধনের বাড়ি। তিনি জখম হওয়ার পরে ছিনতাই ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছিল তাঁর পরিবার। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে পুরাতন কাপাসভাঙার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস নামে এক যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, এ বার খুনের মামলাও রুজু হল। অভিযুক্ত পলাতক। তার খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হারাধন পেশায় কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। সম্প্রতি একটি কাজের বরাত মেলায় এক লক্ষ টাকা অগ্রিম নেন। নিজের একচিলতে টালির চালের ঘরে ওই টাকা না-রেখে তিনি বড়দিনের রাতে কাছেই শান্তি পল্লিতে দিদির বাড়িতে রাখতে যাচ্ছিলেন।
অভিযোগ, শান্তি পল্লির কাছেই দুই মদ্যপ যুবক হারাধনের পথ আটাকায়। তারা পকেটে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিতে গেলে হারাধন বাধা দেন এবং আক্রান্ত হয়ে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারান। ওই যুবকেরা তাঁর পকেট থেকে টাকা নিয়ে পালায়। কিছু পথচারী হারধনকে ওই অবস্থায় দেখে তাঁর বাড়িতে খবর দেন। তদন্তে নেমে পুলিশ হারাধনকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে বিশ্বজিতের নাম পায়।
মৃতের স্ত্রী দোলন বলেন, ‘‘টাকা ছিনিয়েই ওরা শান্ত হল না। খুনও করল। সংসারের একমাত্র রোজগেরে মানুষের মৃত্যুতে ছোট ছেলেমেয়েটাকে নিয়ে বাকি জীবনটা কী করে চলবে জানি না। যারা এই কাণ্ড ঘটাল, তাদের যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়।’’ কাবুল দাস নামে ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘হারাধন নিজের কাজ এবং সংসার নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। এলাকাবাসীর বিপদে এগিয়ে আসতেন। এইধরনের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হল।’’