ফলকই সার। শুকিয়ে গিয়েছে অধিকাংশ চারা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রকল্পের ফলক বলছে, দু’বছর আগে আড়াই লক্ষ টাকারও বেশি ব্যয়ে দু’বছর আগে রাস্তার পাশে দেবদারু গাছ লাগানো হয়েছে। কিন্তু চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের কোদালিয়া ১ পঞ্চায়েতের সিমলাপুল থেকে দেবীপুর পর্যন্ত ২ কিলোমিটার ওই রাস্তার ধারে এখন দেখা মেলে মাত্র একটি দেবদারুর। সেটিরও যত্ন করার কেউ নেই।
স্থানীয়দের দাবি, গাছ পোঁতা হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল বেড়া। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে একটি ছাড়া আর কোনও দেরদারু গাছই বেঁচে নেই। পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান তৃণমূলের শুক্লা চট্টোপাধ্যায়ও দেখভালের অভাবের অভিযোগ মেনে নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছিল। প্রচণ্ড দাবদাহে সে ভাবে নজর দেওয়া হয়নি। তাই বাঁচানো যায়নি।’’ তবে, ঠিক কত গাছ লাগানো হয়েছিল সে তথ্য জানাতে পারেননি শুক্লা।
সিমলাপুলের কাছে দক্ষিণ দিকে এগোলেই ডান দিকে নজরে পড়বে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের ওই ফলক। ২০২০ সালে আমপান ঝড়ে বহু গাছ ভেঙে পড়েছিল। তারপরে রাজ্যে ‘বনসৃজন’ প্রকল্পে জোর দেওয়া হয়। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে সিমলাপুলে দেবদারু গাছ লাগানো হয়। পঞ্চায়েতের তথ্য বলছে, মোট খরচ হয়েছিল ২ লক্ষ ৫৭ হাজার ৮১২ টাকা।
ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করা ব্যবসায়ী কেষ্ট দে’র অভিযোগ, ‘‘রাস্তার একপাশে ঘটা করে গাছ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু তারপর কোনও যত্ন নেওয়া হয়নি।’’
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের ব্যান্ডেল-মগরা বিজ্ঞান কেন্দ্রের সম্পাদক সন্দীপ সিংহ জানান, চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে বনসৃজনে গাছ লাগানো হয়েছে। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেঁচে থাকার হার অত্যন্ত কম। তিনি বলেন, ‘‘ঢিলেঢালা বেড়ার জেরে গবাদি পশুরা চারাগুলি খেয়ে নেয়। দেবদারু গাছের ক্ষেত্রে যেগুলি বাঁচে, সেগুলিকে আঁকড়ে ধরে আগাছা। ফলে, বড় হওয়ার সময়েই মারা যায়। তাঁর অভিযোগ, এ ধরনের গাছগুলি দেখভালের জন্য বিভিন্ন পঞ্চায়েতে জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয় না।