—প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন এবং গণনার দিনে হাওড়া সদরেরবিভিন্ন এলাকায় বুথ জ্যাম, রিগিং, ব্যালট ছিনতাই ও মারধর-ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টে ১২টি মামলা দায়ের হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেবালি-জগাছা পঞ্চায়েতের একটি গণনা কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের মামলাও। এই মামলাগুলি নিয়ে জেলা প্রশাসন খুব একটা উদ্বিগ্ন নয়। বরং তাদের প্রধানমাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে সাঁকরাইল ব্লকের একটি গণনা কেন্দ্রে লুটপাটের ঘটনা। উল্লেখ্য, সাঁকরাইলের ১৫টি বুথে নির্বাচন বাতিল করে ফের ভোট করানোর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তারই মধ্যে দক্ষিণ সাঁকরাইলের একটি বুথেব্যালট ছিনতাইয়ের প্রমাণ মিলেছে এবং তা নিয়ে মামলাও হয়েছে। যা দেখে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের ধারণা, ১৫টি বুথেপুনর্নির্বাচনের পাশাপাশি দক্ষিণ সাঁকরাইলের ওই বুথেও শীঘ্রই পুনর্নির্বাচন ঘোষণা করতে পারে কমিশন।
জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান, দক্ষিণ সাঁকরাইলের ২১৩ নম্বর বুথে ব্যালটছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা গিয়েছে, ওই বুথে গ্রাম পঞ্চায়েতে যিনি দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি মাত্র ৬০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। অথচ লুট হয়েছে ১৭৬টিব্যালট। ওই কর্তা বলেন, ‘‘যে হেতু লুট হওয়া ব্যালটের সংখ্যা পরাজিত প্রার্থীর ভোটের ব্যবধানের চেয়েঅনেক বেশি, তাই ওই কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচন ঘোষণা হতে পারে। ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন ওই ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছে।’’
জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, হাওড়া সদরেহওয়া মামলাগুলির পক্ষে তাঁদের কাছে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা রয়েছে। কিন্তু কাঁটা হয়ে বিঁধছে সাঁকরাইলের সিকম কলেজ গণনা কেন্দ্রেগণনার দিন বিকেলে বহিরাগতদের হামলা ও ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা। অভিযোগ, ওই দিন সাঁকরাইলের বিধায়কের নেতৃত্বে বহিরাগতদের নিয়ে পুলিশের সামনেইচলে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর। শুধু তাতেই ক্ষান্ত হয়নি অভিযুক্তেরা। ব্যালট বাক্স খুলে ব্যালট পেপার ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। বেধড়ক মার খান বিরোধী প্রার্থী ও তাঁদের এজেন্টরা। খুনের হুমকিদেওয়া হয় গণনাকর্মীদের। এমনকি, বিধায়ক নিজে জয়ী বিরোধী প্রার্থীদের শংসাপত্র ছিঁড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ।
এই গোলমালের জেরে প্রায় ছ’ঘণ্টা বন্ধ থাকে ভোট গণনা। শেষে কেন্দ্রীয় বাহিনীরউপস্থিতিতে ফের গণনা হয়। ওই ঘটনার কিছু দিন পরেই নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে, সাঁকরাইল ব্লকের মানিকপুর ও সারেঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫টি বুথে ফের ভোট হবে। এর মধ্যে মানিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯টি ও সারেঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬টি বুথ আছে।
জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান, বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে ঠিক কবে গ্রামপঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদের নতুন বোর্ড শপথ নেবে, বলা যাচ্ছে না। পুনর্নির্বাচনের দিনও জানায়নি কমিশন। তবে পথশ্রী প্রকল্প-সহ অন্য কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিলেই প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েত, তার পরেপঞ্চায়েত সমিতি ও সব শেষে জেলা পরিষদ গঠন করে পূর্ণাঙ্গ কাজ শুরু হবে।