ধৃত মহম্মদ নিহাল (বাঁদিকে) এবং মহম্মদ আবদাল।— নিজস্ব চিত্র।
হাওড়ার কুখ্যাত গ্যাংস্টার গুড্ডু খুনের ঘটনায় শিবপুর এলাকার দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল হাওড়া থানার পুলিশ। ধৃত মহম্মদ নিহাল ওরফে তামান্না এবং মহম্মদ আবদাল ওরফে পোলার্ড শিবপুরের পিএম বস্তির বাসিন্দা।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন এলাকা ছাড়া থাকার পর রামুয়া খুনের পর থেকেই পুরনো এলাকায় ফিরে আসে গুড্ডু। পুলিশের অনুমান, রামুয়ার মৃত্যুর পর শিবপুর অঞ্চলে ফিরে এলাকা দখলের ছক কষছিল গুড্ডু। তা নিয়েই শুরু হয় অশান্তি। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃতরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ওই এলাকায় একটি জলসা ছিল। সেখানে গুড্ডুর সঙ্গে ঝামেলা হয় পিএম বস্তির কিছু যুবকের। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই যুবকেরা সকলে রামুয়ার দলের ছেলেদের ঘনিষ্ঠ।
গত বুধবার সকালে হাওড়া থানার মল্লিক ফটক এলাকায় একটি ট্রলির উপর নলিকাটা দেহ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ মৃতকে শিবপুর এলাকার কুখ্যাত গ্যাংস্টার মানোয়ার আলি ওরফে গুড্ডু হিসাবে চিহ্নিত করে। এক সময়ে হাওড়ার ডন রামুয়ার খুব ঘনিষ্ঠ শাগরেদ ছিল ওই গুড্ডু। কিন্তু পরবর্তীতে রামুয়ার সঙ্গে শত্র্রুতা শুরু হয় তার। তার পরই রামুয়ার ভয়ে এলাকা ছাড়া হয় সে। রবিবার সোদপুরের ফ্ল্যাটে রামুয়া খুন হওয়ার পরই এলাকায় ফেরে গুড্ডু। কিন্তু তার এক দিনের মধ্যেই মেলে গুড্ডুর দেহ।
তদন্তাকারীদের দাবি, জেরায় পোলার্ড জানিয়েছে মঙ্গলবার রাতে বার বার এলাকা দখলের হুমকি দিচ্ছিল গুড্ডু। এর পরেই ওরা গুড্ডুকে মারার ছক করে। কিন্তু, কাজটা সহজ করে দেয় গুড্ডু নিজেই। রাতে প্রচুর মদ্যপান করে বাড়ি ফেরার পথে একটি ট্রলি ভ্যানের উপরেই ঘুমিয়ে পড়ে গুড্ডু। ঘুমন্ত অবস্থাতেই গুড্ডুর গলার নলি কেটে দেয় পিএম বস্তির দুষ্কৃতীরা। জেরায় ধৃত দু’জন পুলিশকে জানিয়েছে, খুনের সময় আরও তিন জন ছিল। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। তদন্তকারীরা ইঙ্গিত দিয়েছেন, গোটা ঘটনায় এটা অনেকটাই স্পষ্ট যে, রামুয়া খুনের বদলা নিতেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে গুড্ডুকে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, “রামুয়ার দলের বড় মাথারা সরাসরি এই খুনে যুক্ত না থাকলেও ওদের পরোক্ষ যোগ আছে।”
আরও পড়ুন: রামুয়া খুনের ৪৮ ঘণ্টা পেরোতেই ডনের পুরনো শাগরেদ খুন, গভীর হচ্ছে রহস্য
আরও পড়ুন: ডিজি নিয়োগে রাজ্যের আর্জি খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট
অন্য দিকে পুলিশ জানতে পেরেছে, গুড্ডু দীর্ঘ দিন ধরে এলাকা ছাড়া থাকার সময় বারুইপুরের মল্লিকপুরের এক কুখ্যাত দুষ্কৃতীর আশ্রয়ে ছিল। ওই সময়ে রামুয়া বিরোধী কোন কোন অপরাধীর ঘনিষ্ঠ ছিল গুড্ডু তা-ও দেখছেন তদন্তকারীরা। কারণ তাঁরা মনে করছেন ওই যোগাযোগ থেকেও রামুয়া খুনের সূত্র মিলতে পারে। কারণ, এখনও রামুয়া খুনে কারা যু্ক্ত তা নিয়ে অন্ধকারে পুলিশ।
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খবর এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলায় খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।)