State News

বেপরোয়া গতি, ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই চলছিল পোলবার পুলকার

গাড়িটি পরীক্ষার পর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, লাগামছাড়া গতিতে চলছিল পড়ুয়া বোঝাই ওই গাড়ি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৬:৪২
Share:

পোলবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। —ফাইল চিত্র।

ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই চলছিল পোলবার দুর্ঘটনায় নয়ানজুলিতে পড়া পুলকার। শুধু তাই নয়, গাড়ির মালিক কে তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ব্যাপক বিভ্রান্তি। ঘটনার এক দিন পর দুর্ঘটনাস্থল এবং গাড়িটি পরীক্ষার পর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, লাগামছাড়া গতিতে চলছিল পড়ুয়া বোঝাই ওই গাড়ি।

Advertisement

দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে হুগলি পুলিশ পরিবহণ দফতরের কাছ থেকে পাওয়া নথি থেকে জানতে পারে যে ওই গাড়িটি বারুইপাড়ার বাসিন্দা রোহিত কোলের নামে নথিভুক্ত। যদিও পুলিশ রোহিত কোলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি দাবি করেন ওই গাড়িটি মার্চ ২০১৯ সালে তিনি মহম্মদ শামিম আফরোজ আখতার নামে শেওড়াফুলির এক যুবককে বিক্রি করে দেন। যদিও রোহিত গাড়ি বিক্রি করার সপক্ষে কোনও গ্রহণযোগ্য নথি দেখাতে পারেননি। অন্যদিকে পুলিশ শামিমের শেওড়াফুলির বাড়িতে গেলে সেখানে তাঁকে পাওয়া যায়নি। জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুরের পর থেকে তিনি বাড়ি ফেরেননি। বাড়ি তালাবন্ধ।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গত বছর থেকেই চুঁচুড়ার ওই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছনোর বরাত পায় শামিম। তাঁর আরও একটি গাড়ি আছে। প্রতিদিন সকালে শামিম কিছু পড়ুয়াকে তুলে নিয়ে এসে শেওড়াফুলির কাছে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়ান। সেখানে তাঁরই মালিকানার অন্য একটি গাড়ি আরও কয়েকজন পড়ুয়াকে তুলে নিয়ে আসে। ওই গাড়িটি চালিয়ে নিয়ে আসেন পবিত্র দাস নামে এক যুবক। এর পর প্রতিদিনই অন্য গাড়িতে (দুর্ঘটনাগ্রস্ত) পবিত্রর গাড়ির পড়ুয়ারা ওঠে। তার পর শামিমের বদলে পবিত্র ওই গাড়িটি চালিয়ে নিয়ে যান চুঁচুড়ার স্কুল পর্যন্ত। তদন্তকারীদের দাবি, দুর্ঘটনার দিনও ঠিক একই ভাবে গাড়ির চালক বদল হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: পুলিশি বাধা উড়িয়ে অমিত শাহের বাড়ির দিকে শাহিন বাগের প্রতিবাদীদের মিছিল

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ঘটনার পর এলাকাতেই ছিলেন শামিম। এমন কি তিনি এসএসকেএমেও গিয়েছিলেন শুক্রবার। কিন্তু শনিবার গাড়ির মালিক হিসাবে তাঁর নাম প্রকাশ্যে আসার পরই তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, ২০১৮ সালের পর ওই গাড়ির আর ফিটনেস টেস্ট হয়নি। মেয়াদ উত্তীর্ণ সার্টিফিকেট দিয়েই চলছিল ওই গাড়ি।

আরও পড়ুন: শ্রাদ্ধ মিটেছে এক মাস, ভূষণ ফিরে বললেন, ‘ভাত দে’

অন্যদিকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি দুই পড়ুয়া দিব্যাংশু ভগত এবং ঋষভ সিংহের সঙ্কট পুরোপুরি কাটেনি বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে। শুক্রবারই দুই পড়ুয়ার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, নয়ানজুলিতে গাড়িটি উল্টে যাওয়ার পর ঋষভের ফুসফুসে নয়ানজুলির দূষিত জল ঢুকে যায়। প্রথম দুই দিন ওই পড়ুয়ার মুখ দিয়ে নল ঢুকিয়ে সেই কাদাজল বের করার কাজ চলছিল। কিন্তু নল বেশিদিল রাখলে সংক্রমণ হতে পারে, এই আশঙ্কায় রবিবার থেকে একমো যন্ত্রের সাহায্যে ফুসফুসে অক্সিজেন পৌঁছে দূষিত জল বের করার কাজ চলছে। চিকিৎসকদের মতে আগামী ৭২ ঘণ্টা দু’জনের ক্ষেত্রেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কাদা জলে দু’জনের ফুসফুসে সংক্রমণ হয়ে যাতে নিউমোনিয়া না হয় তার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। চেষ্ট এক্স রে করা হয়েছে। তবে চিকিৎসকরা আশাবাদী যে দু’জনেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement