প্রতীকী ছবি।
চিরাচরিত বাসস্থান ক্রমাগত ধ্বংস হতে থাকায় এবং কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে দুনিয়া জুড়ে পরাগবাহকের সংখ্যা কমছে। এর ফলে ভারত-সহ তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কৃষকেরা সব চেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন বলে সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে। কারণ, এই সব দেশেই পরাগমিলনের ফলে তুলনায় বেশি শস্য উৎপন্ন হয়।
চলতি সপ্তাহে ‘নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন’ পত্রিকায় প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, তিন-চতুর্থাংশ খাদ্যশস্য এবং ফুলগাছের প্রজননের জন্য দরকার হয় মৌমাছি, প্রজাপতি, হামিংবার্ড, বাদুড়, বোলতার মতো পরাগবাহকের। কিন্তু এদের সংখ্যা ক্রমশই কমছে।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ২০ জন বিশেষজ্ঞ এই গবেষণা চালিয়েছেন। নেতৃত্বে ছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক লিন ডিক্স। ওই দলে ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক পার্থিব বসু। গবেষণায় উঠে এসেছে, পরাগবাহকদের বাসস্থান ধ্বংস, সার ও কীটনাশকের ঢালাও ব্যবহার, চারণভূমি বাড়ানোর জন্য ঝোপঝাড় কেটে ফেলা, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে আশঙ্কাজনক ভাবে দুনিয়া জুড়েই পরাগবাহকের সংখ্যা কমছে। তবে এ ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ঠিক কতটা, সেই বিষয়ে এখনও খুব বেশি তথ্য সংগ্রহ করা যায়নি বলে জানানো হয়েছে।
লিন ডিক্স একটি বিবৃতিতে জানান, পরাগবাহকদের ক্ষেত্রে যা ঘটে চলেছে, তা মানবসভ্যতার উপরে বিশাল কুপ্রভাব ফেলতে পারে। এই ক্ষুদ্র প্রাণীরা পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যের ক্ষেত্রে খুব বড় ভূমিকা পালন করে। তারা যদি এত দ্রুত হারিয়ে যায়, গুরুতর সমস্যায় পড়তে পারে পৃথিবী। ‘‘এই গবেষণায় স্পষ্ট যে, ভারত-সহ বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে পরাগবাহকদের স্বাস্থ্য বজায় রাখা কতটা জরুরি। কীটনাশক ব্যবহার কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা এবং কৃষি ভূ-চিত্রে এদের বাসভূমি পুনরুদ্ধার করা আশু প্রয়োজন। নইলে বিপদে পড়বেন লক্ষ লক্ষ গরিব কৃষক,’’ শুক্রবার বলেন পার্থিববাবু।