প্রতীকী ছবি।
মধ্যযুগের ইতিহাস-বিশেষজ্ঞ অনিরুদ্ধ রায় (১৯৩৬-২০১৮) প্রয়াত হয়েছেন। শনিবার গভীর রাতে কলকাতায় নিজের বাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। বিপত্নীক অনিরুদ্ধবাবুর এক ছেলে এবং এক মেয়ে আছেন। রবিবার তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদের সম্পাদক আশিসকুমার দাস জানান, অনিরুদ্ধবাবু ছিলেন মধ্যযুগীয় ভারতের ইতিহাস চর্চার অন্যতম পথিকৃৎ। তাঁর প্রয়াণ যথার্থই ইতিহাস চর্চায় নক্ষত্রপতন। কর্মসূত্রে প্রথমে চারুচন্দ্র কলেজে ইতিহাসের শিক্ষকপদে যোগ দেন অনিরুদ্ধবাবু। পরে গবেষণা করতে যান প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে ফিরে এসে শিক্ষকতা শুরু করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐস্লামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে। চার দশক ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে ছিলেন। বাংলা ও ইংরেজিতে ৩৩টি গ্রন্থ এবং অন্তত দু’শো প্রবন্ধ লিখেছেন তিনি। ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদেরও সভাপতি ছিলেন দীর্ঘদিন। মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করার জন্য ও-পার বাংলা অনিরুদ্ধবাবুকে দিয়েছে ‘বাংলাদেশের বন্ধু’ সম্মান।
ইতিহাসবিদ রজতকান্ত রায় বলেন, ‘‘খুবই দুঃখের সংবাদ। অনিরুদ্ধবাবু মূলত মধ্যযুগীয় ইতিহাসের বিশেষজ্ঞ হলেও সামগ্রিক ইতিহাসের উপরে তাঁর দখল ছিল। তাঁর বহু রচনাই আমার কাজে অনেক সাহায্য করেছে। অনিরুদ্ধবাবুর অনেক লেখা এখনও ছড়িয়েছিটিয়ে অগ্রন্থিত অবস্থায় রয়েছে। কেউ সেগুলিকে এক জায়গায় করে ‘ভলিউম’-এ অর্থাৎ সামগ্রিক ভাবে প্রকাশ করতে উদ্যোগী হলে খুশি হব।’’
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর অনিরুদ্ধবাবুর সঙ্গে কাজ করেছেন ইতিহাসবিদ গৌতম ভদ্র। সঙ্গী শিক্ষক-ইতিহাসবিদের প্রয়াণে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘অনিরুদ্ধবাবু ইতিহাসবিদ তো ছিলেনই। সেই সঙ্গে ছিলেন ক্রীড়ানুরাগী এবং দক্ষ সংগঠকও। খুব ভাল ফরাসি ভাষা জানতেন। সব সময় হাসিখুশি থাকাই ছিল তাঁর প্রধান পরামর্শ।’’