কার্শিয়ং বিডিও অফিসের সামনে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা।
পাহাড় বন্ধের নামে সেখানে কার্যত লাগাতার সরকারি অফিস বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। উল্টো দিকে, মোর্চাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের আবশ্যিক হাজিরার কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, সোমবার সেই বন্ধের প্রথম দিনে এগিয়ে থাকলেন মমতাই। মোর্চার ডাক উপেক্ষা করে দার্জিলিং, কালিম্পং থেকে কার্শিয়ং— সর্বত্র রাজ্য সরকারি অফিসে হাজিরা দিয়েছেন বড় অংশের রাজ্য সরকারি কর্মচারী।
ধর্মঘট ডাকার সময়ই মোর্চার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল, এর আওতায় থাকবে না স্কুল-কলেজ, যানবাহন পরিষেবা, হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং দোকানপাট। আওতায় ছিল শুধু রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারি অফিস, জিটিএ অফিস এবং ব্যাঙ্কগুলি।
মিরিক পুরসভায় অন্যন্য দিনের মতোই কাজে ব্যস্ত চেয়ারম্যান এল বি রাই
প্রশাসন সূত্রে খবর, পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্ধ ডাকা হলেও এ দিন সকাল থেকেই সরকারি অফিসে হাজিরা ছিল প্রায় অন্যান্য দিনের মতোই। দার্জিলিং জেলা কালেক্টরেট অফিসে বেলা ১২টা পর্যন্ত হাজিরা ছিল প্রায় ৯২ শতাংশ। শেষ পর্যন্ত ওই হাজিরা ৯৯ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছবে বলে দাবি করেছেন রাজ্য সরকারের পদস্থ এক অফিসার। অন্যান্য রাজ্য সরকারি অফিসেও হাজিরা ছিল ৫০ শতাংশের আশেপাশে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরগুলোতে হাজিরার হিসেব এখনও মেলেনি।
আরও পড়ুন: নয়া রক্ষী পাবেন কি গুরুঙ্গ
সপ্তাহে দু’দিন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার, ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে বলে জানিয়েছিল মোর্চা। সেই মতো আজ এমনিতেই স্বাভাবিক ছিল ব্যাঙ্ক পরিষেবা। সকাল থেকেই খোলা ছিল সমস্ত দোকানপাটও। তবে গোলমালের আশঙ্কায় বেশির ভাগ পর্যটক সমতলে নেমে যাওয়ায় পর্যটকের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো কম।
এ দিন সকালে বিজনবাড়ির ব্লক অফিসে ও লেবংকার্ট রোডের পিডব্লুউডি অফিসে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে বেশ কিছু দুষ্কৃতী। আগুনে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থও হয়েছে ওই দু’টি অফিস। বিদ্যুৎ দফতরের অফিসও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে খবর। তবে বড়সড় কোনও গোলমাল এখনও পর্যন্ত হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
দেখুন সেই ভিডিও
এ দিন সকাল থেকেই পুলিশ, সেনা, ও আধাসেনার কড়া নিরাপত্তায় কার্যত মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা পাহাড়। নেমেছে সিআরপিএফ-এর বিশাল বাহিনী। রাস্তার মোড়ে মোড়ে চলছে টহলদারি।
অন্য দিকে, এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে গতকালের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে অনেকটাই সুর নরম করেছেন রোশন গিরি। গতকাল বলেছিলেন, পাহাড়ে পর্যটকরা থাকলে তাঁরা নিজেদের দায়িত্বে থাকবেন। কিন্তু সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে রোশন বলেন, ‘‘পর্যটক, ব্যবসায়ীরা আমাদের বন্ধু। তাঁদের কোনও অসুবিধা হবে না। আমরা আপনাদের পাশে আছি।’’ তবে এ দিন পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়েছন তিনি। জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার কিছু করবে না। কেন্দ্র কিছু একটা পদক্ষেপ তো করুক!
(নিজস্ব চিত্র)