সিউড়ি পুরসভার তছরুপ মামলায় হলফনামা তলব

সিউড়ি পুরসভায় তা হলে একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ হচ্ছে এবং আর্থিক তছরুপের অভিযোগও উঠছে! শাসক দলেরই এক বিধায়কের মামলায় শুক্রবার এই তির্যক মন্তব্য করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। ওই অভিযোগ সম্পর্কে সিউড়ি পুরসভা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য কী, তা হলফনামা দিয়ে তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৫ ০৩:১৪
Share:

সিউড়ি পুরসভায় তা হলে একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ হচ্ছে এবং আর্থিক তছরুপের অভিযোগও উঠছে!

Advertisement

শাসক দলেরই এক বিধায়কের মামলায় শুক্রবার এই তির্যক মন্তব্য করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। ওই অভিযোগ সম্পর্কে সিউড়ি পুরসভা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য কী, তা হলফনামা দিয়ে তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

সিউড়ির সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষের অভিযোগ, ওই পুরসভায় কেন্দ্রের টাকায় জল ও বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছিল। ১২ কোটি টাকা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কংগ্রেস পরিচালিত পুরবোর্ড সাত কোটি খরচ করে। ২০১০ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড। তার পর থেকে ওই দু’টি প্রকল্পে মাত্র ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। বাকি টাকা ব্যাঙ্কে থাকার কথা। কিন্তু সেই টাকা ব্যাঙ্কে নেই। বিধায়কের দাবি, তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে তাঁর অভিযোগের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু দল কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

Advertisement

ওই টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পরে পরেই দল-বিরোধী উক্তির জন্য স্বপনবাবুকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে সপ্তাহ দুয়েক আগে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থের মামলা দায়ের করেন ওই বিধায়ক। এ দিন সেই মামলার শুনানি ছিল। স্বপনবাবুর আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানান, কেন্দ্রের টাকায় বস্তি উন্নয়ন ও জল প্রকল্পের কাজ হওয়ার কথা। কিন্তু সেই কাজ হচ্ছে না। যে-টাকা খরচ হয়নি, তার হিসেবও মিলছে না। এবং সেই টাকা ব্যাঙ্কেও নেই।

সিউড়ি পুরসভার কর্তৃপক্ষের আইনজীবী সর্দার আমজাদ আলি তার পরেই আদালতে দাবি করেন, ওখানে জল ও বস্তি প্রকল্পের কাজ হচ্ছে।

দু’পক্ষের দুই আইনজীবীর বক্তব্য শুনেই প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, কাজ আর তছরুপের নালিশ দু’‌টোই তা হলে একসঙ্গে চলছে!

পুর-কর্তৃপক্ষের তরফে আইনজীবী আমজাদ আদালতে জানান, যিনি অভিযোগ করছেন, তিনি এলাকার বিধায়ক। তিনি নিশ্চয়ই জানেন, রাজ্য বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি রয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজের হিসেব নেবে সেই কমিটিই। প্রধান বিচারপতি সিউড়ি পুরসভার আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘পুর-কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন, তছরুপের অভিযোগ সম্পর্কে তাঁরা তাঁদের বক্তব্য জানাবেন না, তা হলে তাঁরা সেটা বলুন!’’ পুরসভার আইনজীবী এর কোনও জবাব না-দেওয়ায় প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, আগামী ছ’সপ্তাহের মধ্যে অভিযোগ সম্পর্কে পুরসভাকে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে।

এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিউড়ি পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান, তৃণমূলের উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ এখনও হাতে পাইনি। নির্দেশ পেলে যথাস্থানে যথাযথ জবাব দেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement