প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গির পাশাপাশি লিভারের অসুখ ছিল ট্যাংরার বাসিন্দা লি সেয়ং কুয়োংয়ের (২৪)। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ২৪ বছরের ওই যুবক। তাঁকে বাঁচানো যায়নি। কিডনি প্রতিস্থাপনের পরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন মেদিনীপুরের এক যুবক। শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। ডায়াবিটিসের সঙ্গে ডেঙ্গি দোসর হয়ে রোগীর জীবন বিপন্ন করে তুলেছে, এমন উদাহরণও অনেক। এই ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসা পদ্ধতি কী হবে, সেই বিষয়ে একটি নির্দেশিকা-রূপরেখা তৈরি করতে চলেছে স্বাস্থ্য ভবন।
এখন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু ঠেকাতে স্বাস্থ্য ভবনের একটি ‘প্রোটোকল’ রয়েছে। জটিল ডেঙ্গির ক্ষেত্রে কী করতে হবে, ডেঙ্গি শক হলে কী করণীয়— সবই বলা আছে তাতে। কিন্তু ডেঙ্গির পাশাপাশি ডায়াবিটিস, কিডনি বা লিভারের অসুখের (কো-মর্বিডিটি) দরুন রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কী করণীয়, সেই বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা নেই। স্বাস্থ্য ভবন এত দিনে সেই রূপরেখা তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, ডেঙ্গি জ্বরের ক্রিটিক্যাল ম্যানেজমেন্টের ব্যাপারে ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তৈরি একটি নির্দেশিকা রয়েছে। ডেঙ্গির পাশাপাশি কোনও রোগীর ডায়াবিটিস, কিডনি বা লিভারের অসুখ থাকলে পরিস্থিতি যে খারাপ হয়, তার উল্লেখ আছে তাতে। কিন্তু সেই সব ক্ষেত্রে কী ভাবে চিকিৎসা করতে হবে, ওই কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় তা বলা হয়নি। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর) নতুন করে একটি নির্দেশিকা তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে। তা হলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে-কাজ করবে, তা সম্পূর্ণ আলাদা।
আরও পড়ুন: রাজ্যে ১০০ দিনের কাজে যুক্ত হচ্ছে আরও দফতর
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে চিকিৎসার ব্যাপারে ৬৯ শতাংশ ডেঙ্গিরোগী সরকারি হাসপাতালের পরিষেবায় আস্থা রেখেছেন। গত বছর এই হার ছিল ৫৩ শতাংশ। এই বিপুল সংখ্যক রোগীর মধ্যে অনেকের ক্ষেত্রে অন্য অসুখ বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সব রোগীকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরানো গিয়েছে, এমন নজির রয়েছে। ‘‘ডায়াবিটিস, কিডনি, লিভারের অসুখে আক্রান্ত রোগীর ডেঙ্গি হলে কী কী গন্ডগোল হতে পারে, তার চিকিৎসা কী হবে— এই সব বিষয়ে কোথাও কিছু বলা নেই। আমরা এ বার সেই কাজটাই করছি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে এই নির্দেশিকা-রূপরেখা তৈরি করবেন,’’ বলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।