নিউ দিঘায় চলছে জগন্নাথ মন্দির তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র ।
আসছেন মাত্র এক দিনের জেলা সফরে। সূচি অনুসারে দিঘায় এবার তাঁর যাওয়ার কথাও নেই। কিন্তু আগামী ৪ মার্চ পূর্ব মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের আগে দ্রুত চলছে সৈকতের বুকে দিনরাত জগন্নাথ ধাম তৈরির কাজ চলছে।
নিউ দিঘায় রেল স্টেশনের পাশে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে জগন্নাথ সেবাধাম ও সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে উঠছে। এর জন্য ২২ একর জমি দরকার ছিল। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ ২০ একর জমি দিয়েছে। পরে এক বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে তিন একর জমি নেওয়া হয়। এখানে জগন্নাথ দেবের মূল মন্দিরের পাশাপাশি, আরও ছ’টি অন্য মন্দির বানানো হচ্ছে। ভিন্ রাজ্য থেকে পাথর এনে বসানো হচ্ছে সবকটি মন্দিরে। চলতি বছর ১২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন করেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর আগামী এপ্রিলে জগন্নাথ ধামের উদ্বোধন করার কথা মমতার। তার আগে পূর্ব মেদিনীপুর সফরে তিনি দিঘা না গেলেও জগন্নাথ ধাম নির্মাণের কাজের অগ্রগতি নিয়ে রিপোর্ট চাইতে পারেন বলে অনুমান প্রশাসনের। সে জন্য যত দ্রুত সম্ভব জগন্নাথ ধাম নির্মাণের কাজ তারা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে।
২০২২ সালে ৩ মে শুরু হয় মন্দির নির্মাণ কাজ। নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের সংস্থা হিডকো’কে। তারা মূল জগন্নাথ মন্দির এবং অন্য মন্দিরের নকশা প্রকাশ করেছেন। হিডকোর ইঞ্জিনিয়ার সুমন নিয়োগী বলেন, ‘‘ওড়িশার পুরীতে যে জগন্নাথ মন্দির রয়েছে, সেই একই উচ্চতা সম্পন্ন মন্দির এখানেও হবে। মন্দিরের পাশাপাশি আনুষঙ্গিক যা কিছু থাকে, সবই নির্মাণ চলছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার আপাতত ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। যদিও জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি কোথায় হবে, কোন রাস্তা ধরে রথ যাবে, তা এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
এদিকে, রামমন্দিরের উদ্বোধনের পরে কাজের গতি বেড়ে গিয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর আসন্ন জেলা সফরের আগে সেই নির্মাণ কাজের ব্যস্ততা তুলনায় আরও অনেক বেড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কাজকর্ম। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে হিডকো’র উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল আসতে পারে বলে খবর। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক বলছেন, ‘‘দিঘাকে পর্যটন মানচিত্রে আলাদা গুরুত্ব জগন্নাথ মন্দির তৈরি করছে রাজ্য সরকার। এখন হিডকো দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে। অতিরিক্ত নির্মাণ কর্মী।’’
রাজ্য সরকারের টাকায় জগন্নাথ ধাম তৈরি নিয়ে কটাক্ষ করে নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আগেই কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‘দিঘায় সরকারি টাকা খরচ করা হচ্ছে। কোনও সরকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারে না। এখানে মন্দির নির্মাণের নাম করে যারা সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ছে, তারা পাপ করছে।’’ যদিও, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বলছেন, ‘‘ধর্মীয় ভেদাভেদের রাজনীতি করে কেন্দ্রের শাসকদল।’’