দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করে দিলেন। কিন্তু সেই দলের টিকিটে নির্বাচিত বিধায়ক-পদ থেকে ইস্তফা দিতে নারাজ। সাম্প্রতিক কালে অন্যান্য দল থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েও যে ভাবে বিধায়ক থেকে যাওয়ার রেওয়াজ দেখা দিয়েছে, সেই ধারায় নতুন সংযোজন হল হরকা বাহাদুর ছেত্রীর নাম!
গত কয়েক দিনের জল্পনাকে সত্যি প্রমাণ করেই শুক্রবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্তা ছাড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন হরকা। জানিয়েছেন, মোর্চায় সম্মান পাচ্ছিলেন না। গণতান্ত্রিক পথে, আলোচনা করে কোনও সিদ্ধান্তও নেওয়া হচ্ছিল না। আপাতত তিনি কালিম্পঙের নির্দল বিধায়ক হিসাবেই কাজ চালিয়ে যেতে চান। কলকাতা থেকে কয়েক দিন পরে পাহাড়ে ফিরে বুঝে নিতে চান, তাঁর এই সিদ্ধান্তে কালিম্পঙের মানুষের কী প্রতিক্রিয়া। তার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন। অদূর ভবিষ্যতে তৃণমূলে যোগ দেবেন কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও উত্তর অবশ্য দেননি হরকা। বরং রহস্য বজায় রেখে মন্তব্য করেছেন, ‘‘যত দিন না আমি অন্য কোনও দলে যোগ দিচ্ছি, তত দিন নানা জল্পনা চলবেই। জল্পনা চলুক! পরে দেখা যাবে!’’
বিধানসভার স্বল্পকালীন অধিবেশন এ দিন শোকপ্রস্তাব নিয়েই মুলতবি হয়ে গিয়েছে। তার পরেই বিধানসভা চত্বরে দাঁড়িয়ে তাঁর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন হরকা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মোর্চায় ঠিকমতো আলোচনা করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছিল না। কিছু সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। এ বার তো সেটা তুঙ্গে পৌঁছল, যখন ঠিক হয়ে গেল বিধায়কেরা নাকি ইস্তফা দেবেন। অথচ সেটা বিধায়কেরাই জানলেন না! মোর্চা যা করছে, করুক। এই রকম পরিবেশে আমার পক্ষে আর মানিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।’’ তিনি দল ছেড়ে দেওয়ার পরে মোর্চার বাকি দুই বিধায়ক কী করবেন? হরকা বলেন, ‘‘ওঁরা যথেষ্ট জ্ঞানী ও বিচক্ষণ মানুষ। ওঁরা নিজেদের কর্তব্য নিজেরাই বুঝে নেবেন।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ে গেলেই তাঁর সঙ্গে হরকার মোলাকাত হয়। তা থেকেই জল্পনা গতি পেয়েছে, হরকা তৃণমূলেই যাবেন! এই প্রসঙ্গে এ দিন হরকার মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার অন্তত ৫০ বার দেখা বা কথা হয়েছে। কথা হলেই একটা কিছু ধরে নিতে হবে? আমি আপাতত নির্দল বিধায়ক হিসাবে কাজ করব। তার পরে কালিম্পঙের মানুষ কী ভাবছেন, তা দেখে সিদ্ধান্ত নেব।’’