বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
সুষ্ঠুভাবে জিটিএ চালানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত চিঠি পাঠালেন জিটিএ চিফ বিমল গুরুঙ্গ। সোমবার ফ্যাক্স করে গুরুঙ্গ কলকাতায় ওই চিঠি পাঠিয়েছেন।
এ দিনই দুপুরে চারদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে তিনি আলিপুরদুয়ারে গিয়েছেন। গুরুঙ্গদের বক্তব্য, স্বশাসিত সংস্থা হিসাবে জিটিএ যাতে চলতে পারে, তার ব্যবস্থা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। পরে জিটিএ-র সদস্য তথা মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি জানান, আগামী ২ অগস্ট জিটিএ-র চার বছর পূর্ণ হবে। কিন্তু রাজ্য সরকার অনেক কিছুই চুক্তিমাফিক করছে না। তাতে জিটিএ চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের।
রোশন গিরি বলেন, ‘‘আমরা প্রাথমিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে একটি স্মারকলিপি পাঠালাম। সেখানে সমস্যার বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়েছে। আগামী মাসে মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফরের কথা রয়েছে। তখন আমরা তাঁর সঙ্গে দেখা করে সমস্ত কিছু জানাব।’’
মোর্চা নেতারা জানান, এখনও বহু দফতর হস্তান্তর না হওয়ায় জিটিএ চালাতে সমস্যা হচ্ছে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর হস্তান্তর নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও তা এখন হস্তান্তর করা হয়নি। সেইভাবেই পূর্ত দফতর, পঞ্চায়েত, দমকল ও আপৎকালীন পরিষেবা, আবগারি, খাদ্য সরবরাহের মত দফতরগুলি হস্তান্তর করা হয়নি। এমনকি, জিটিও নিজেদের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগও ঠিক মতোও চালু করতে পারছে না। এই পরিস্থিতি রাজ্যের জন্যই তৈরি হয়েছে। আবার শুধু দফতর হস্তান্তর নয়, তহবিল বরাদ্দ নিয়েও সমস্যা চলছে।
জিটিএ-র তরফে রোশন গিরি জানান, রাজ্যের বরাদ্দ অপ্রতুল। এতে উন্নয়নের কাজ ঠিকঠাক করা যাচ্ছে না। ২০১৪-১৫ সালের বাজের বরাদ্দ ৯০ কোটির মধ্যে মাত্র ৬৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। ২০১৫-১৬ সালে ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ বাজেটে ঘোষণা হলেও দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র ৪২.৯০ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের এপ্রিল এবং জুলাই মাসে ধস, ভূমিকম্পে পাহাড়ে প্রচুর ক্ষতি হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি ঘুরে দেখে রাজ্যের মাধ্যমে টাকা দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু রাজ্য থেকে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য এক টাকাও মেলেনি।
জিটিএ সদস্যরা জানিয়েছেন, অস্থায়ী কর্মী এবং অস্থায়ী শিক্ষকদের বিষয়টি নিয়েও পাহাড়ে সমস্যা বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে গুরুঙ্গ পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সিং কলেজ, কলেজ সার্ভিস কমিশনের কথাও উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে পাহাড় সফরে আসার পর মুখ্যমন্ত্রী যাতে বিষয়গুলি শোনেন, তার অনুরোধও জানানো হয়েছে।