মমতা বলেছেন, ভোটের জন্যই গুজরাত সরকার যথেষ্ট সাহায্য করতে পারেনি। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গুজরাতেও ইডি-সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ রাজ্যে যখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা একের পর এক দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছে, তখন তিনি এমন দাবি করলেন। বুধবার চেন্নাই যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে মমতা ওই মন্তব্য করেন মোদীর রাজ্যে সেতু ভেঙে পড়া প্রসঙ্গে। মানুষের জীবন নিয়ে তিনি কোনও রাজনীতি চান না বলেও জানান। তবে সরাসরি মোদীকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।
রাজ্যের অস্থায়ী রাজ্যপাল লা গণেশনের পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চেন্নাই রওনা হন মমতা। তার আগে তিনি বলেন, ‘‘অসম্পূর্ণ সেতুকে সম্পূর্ণ বলে দেখিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। আমার মনে হয় এ জন্য সুপ্রিম কোর্টের অধীনে বিচারবিভাগীয় কমিশন হওয়া উচিত। এর বেলায় কেন ইডি-সিবিআই দেখছে না?’’
তবে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে সেতু বিপর্যয়ের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত চাইলেও মমতা প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। বরং যখন মোদীর প্রসঙ্গ তুলে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছেন, তখন মমতা স্পষ্ট করে দেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপারে আমি একটি কথাও বলব না কারণ এটি তাঁর নিজের রাজ্য।’’ যদিও এর পরেই মমতার সংযোজন, ‘‘আমাদের এখানে যখন এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছিল, যদিও সেখানে মৃত্যু কম হয়েছিল, আমি তখন মেদিনীপুরে থাকলেও চলে এসেছিলাম। কিন্তু গুজরাতের সরকার ভাল ভাবে সাহায্য করতে পারেনি। কারণ, তারা ভোট নিয়ে ব্যস্ত ছিল।’’
মমতা জানিয়েছেন, তিনি এই দুর্ঘটনায় ব্যথিত। দুর্ঘটনাস্থলে নিজে যেতেও যান। পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, এখন সেখানে গেলে সবাই ভাববে রাজনীতি করতে এসেছেন তিনি। কারণ গুজরাতে সামনে ভোট। আর তিনি রাজনীতি করতে চান না।
তা হলে মোরবীর সেতু ভেঙে মৃত্যুর ঘটনায় দায় কার? মমতা বলেন, ‘‘আসলে ভোটের জন্যই এটা হয়েছে, সার্টিফিকেট পাওয়ার আগেই খুলে দেওয়া হয়েছিল সেতু। যা ঠিক নয়। সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করা উচিত নয়, যারা এতগুলো মানুষের জীবন নিয়ে খেলেছে, তাদেরই দায় নেওয়া উচিত।’’ পশ্চিমবঙ্গে বহু মামলার তদন্তে এই মুহূর্তে কাজ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডি। তার প্রসঙ্গ টেনেই মমতা বলেন, ‘‘ইডি-সিবিআই সাধারণ মানুষের পিছনে পড়ে রয়েছে, অথচ এদের মতো অপরাধীদের ক্ষমা করছে কেন? যে ঠিকাদার ছিল বা টেন্ডার যারা দিয়েছিল, তারা তো অপরাধী!’’
মমতা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর কাছে রাজনীতির থেকে অনেক বড় মানুষের জীবন। এমনকি, গত রবিবারও গুজরাতের দুর্ঘটনার পর মমতা গুজরাত সরকারের কোনও সমালোচনা করেননি। তিনি টুইটারে লিখেছিলেন, ‘‘গুজরাতের মোরবীতে সেতু বিপর্যয়ের ঘটনায় গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। বহু মানুষ নিখোঁজ। মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’’