প্রতিবাদ: স্বাস্থ্য বিলের বিরুদ্ধে কালো ব্যাজ ডাক্তারদের। বৃহস্পতিবার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে। ছবি: সুমন বল্লভ।
চিকিৎসকদের প্রতিবাদ দিবসেও রাজনৈতিক তরজা আর ঘরোয়া কোন্দল পিছু ছা়ড়ল না ডাক্তারদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ-র।
গোড়া থেকেই রাজ্যের স্বাস্থ্য বিলের বেশ কয়েকটি ধারা নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিধানসভায় সেই বিল পাশের পরেও সভা করে এবং রাস্তায় নেমে তার বিতর্ক-বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছে আইএমএ। সেই বিতর্কের পাশাপাশি আইএমএ-র ঘরোয়া কোন্দলও সামনে এসেছে বারবার। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য বিলের বিরোধিতা করে দেশ জুড়ে ‘কালা দিবস’ পালনের অনুষ্ঠানেও এ রাজ্যে সামনে এসেছে আইএমএ-র ঘরোয়া বিবাদ।
এ দিন বিধানচন্দ্র রায়ের বাড়ির সামনে আইএমএ-র কেন্দ্রীয় কমিটির ডাকা মূল প্রতিবাদ কর্মসূচিতে রাজ্য শাখার সম্পাদক শান্তনু সেন অনুপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের এমন একটি কর্মসূচিতে তিনি নেই কেন, সেই প্রশ্ন করা হলে তিনি ‘ব্যস্ত আছি’ জানিয়ে ফোন কেটে দেন।
গত ১৬ এপ্রিল কলকাতায় আইএমএ-র কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পরে স্বাস্থ্য বিলের কিছু অংশ নিয়ে আপত্তি তুলে এই কালা দিবস পালনের কথা ঘোষণা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তার পরেই সংগঠনের রাজ্য শাখার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ, রাজ্য শাখার সম্পাদক শাসক দলের কাউন্সিলর এবং তিনি প্রথম থেকেই স্বাস্থ্য বিলের পক্ষ নিয়ে কথা বলে এসেছেন।
আরও পড়ুন: আটপৌরে ঘরে খেলেন অমিত
আইএমএ-র কেন্দ্রীয় সভাপতি কে কে অগ্রবাল অবশ্য এই রাজনৈতিক যোগাযোগকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত রাজনৈতিক পছন্দের সঙ্গে সংগঠনের কাজের সম্পর্ক নেই।’’ এ দিনের কর্মসূচিতে রাজ্য সম্পাদকের এই অনুপস্থিতিকে কী ভাবে দেখছেন তিনি? অগ্রবাল বলেন, ‘‘সংগঠন তো কোনও একটি মাত্র ব্যক্তিকে নিয়ে তৈরি নয়। কেউ সংগঠনের কোনও পদে বহাল থাকলে তাঁকে কেন্দ্রীয় কমিটির নিয়ম মেনে চলতে হবে। যদি কেউ সেই নিয়ম অমান্য করেন, সংগঠন সেটা খতিয়ে দেখবে।’’
আইএমএ-র কেন্দ্রীয় সভাপতি কারও নাম করেননি। তবে সংগঠনের দক্ষিণ কলকাতা শাখার সভাপতি রামদয়াল দুবে রাখঢাক না-করেই বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অমান্য করছেন শান্তনু সেন। শৃঙ্খলা ভাঙায় ওঁর শাস্তি হওয়া উচিত।’’
রাজ্যের চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ এ দিন কালো ব্যাজ পরে রোগী দেখেছেন। হাসপাতাল ও ক্লিনিকের নোটিস বোর্ডেও কালো কাপড় টাঙিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। ‘‘পরিকাঠামোর অভাবকে সঙ্গী করেই চিকিৎসকেরা সর্বত্র কাজ করছেন। তবু তাঁদের হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। সরকার চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবে না কেন,’’ প্রশ্ন ওঠে প্রতিবাদসভায়।