অলংকরণ: শৌভিক দেবনাথ
পাত্র চাই। তবে স্কুল শিক্ষক ‘নট অ্যালাউড’। রবিবার একটি দৈনিক পত্রিকার এমনই একটি বিজ্ঞাপন ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম।
নিয়োগ দুর্নীতিতে জেরবার রাজ্যের শিক্ষামহল। এর মধ্যেই বহু শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে সিবিআই নিয়োগ সংক্রান্ত নথিও চাইছে শিক্ষা দফতরের কাছ থেকে। এরই মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের এক পাত্রীর জন্য পরিবারের লোকজন পাত্রের খোঁজ চেয়ে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। তাতে লেখা—‘উপযুক্ত পাত্র কাম্য (স্কুল শিক্ষক ব্যতীত)’। রবিবার এই বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই তা নেটিজেনদের নজর কাড়ে।
কিছু দিন আগে আলিপুরদুয়ারে প্রাথমিকের এক শিক্ষককে ঋণ দিতে গিয়ে টেট পাশের নথি চান ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এ বার স্কুল শিক্ষক বাদ দিয়ে পাত্রের খোঁজ মেয়ের বাবার!
প্রশাসন সূত্রের খবর, চলতি মাসে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে হাই কোর্টের একটি নির্দেশে ২৬৯ জনের চাকরি গিয়েছে। এর মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের ৪০ জনের চাকরি গিয়েছে। এ দিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে সিবিআই তদন্তও চলছে। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের কাগজপত্র চেয়ে পাঠানো হয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে। ডালখোলার এক অভিভাবক রঞ্জন দাসের কথায়, ‘‘হাইকোর্ট শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়টি যে ভাবে চেপে ধরেছে তাতে দুর্নীতিগ্রস্তদের চাকরি চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। এই পরিস্থিতিতে মেয়ের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে শিক্ষক ছাড়া পাত্রের খোঁজ করেছেন ওই মেয়ের পরিবার। তবে এ ভাবে হয়তো বিজ্ঞাপন দেওয়া উচিত হয়নি।’’
প্রাক্তন শিক্ষক মহম্মদ সাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘এ যেন উলাট-পুরাণ। একটা সময় ছিল মেয়ের জন্য শিক্ষক পাত্র চাইত পরিবার। তার জন্য অনেকেই মোটা অঙ্কের পণও দিতে পিছপা হতেন না।’’ তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চৌহান বলেন, ‘‘এই ধরনের বিজ্ঞাপন দিয়ে মেয়ের পরিবার শিক্ষক সমাজকে অপমান করেছেন।’’