—ফাইল চিত্র।
বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে ‘উপযুক্ত মর্যাদা’ না পেয়ে ক্ষোভ জানানোর ন’দিনের মধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিধানসভা ঘুরে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আজ, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে তিনি বিধানসভায় যাবেন বলে রাজভবন জানিয়েছে।
বিধানসভার অধিবেশন আজ পর্যন্ত মুলতুবি রয়েছে। ফলে স্পিকার থাকবেন না বলে রাজভবনে জানিয়ে দেন বিধানসভার সচিব। ডেপুটি স্পিকার, রাজ্যের কোনও মন্ত্রী এবং বিধায়কেরাও বিধানসভা ভবনে থাকবেন না বলে খবর। তা সত্ত্বেও রাজ্যপালের বিধানসভা-দর্শন তাঁর ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী হবে বলে রাজভবনের ইঙ্গিত।
বুধবার রাজ্যপাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও গিয়ে উপাচার্য-সহ সংশ্লিষ্ট কোনও আধিকারিকের দেখা পাননি। আজ বিধানসভায় তেমন পরিস্থিতিরই পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা। অনেকের মতে, নিজের সিদ্ধান্তে এই ভাবে একের পর এক কর্মসূচি নিয়ে রাজ্যপাল কার্যত রাজ্য সরকারের ‘অসহযোগিতা’র নজির বাড়াতে চাইছেন।
আরও পড়ুন: ‘আমার ছেলেটাকে কেন বেঘোরে মরতে হল’
রাজ্যপাল নিজেই এ দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার আমি বিধানসভায় যাব। এর আগে যে দিন গিয়েছিলাম, শুধু বক্তৃতা করে চলে এসেছি। সে দিন বিধানসভা ঘুরে দেখা হয়নি। ঐতিহাসিক এই ভবনে গিয়ে গ্রন্থাগারটাও ঘুরে দেখব। শুনেছি, বিধানসভায় কত গুরুত্বপূর্ণ নথি রয়েছে। কত আইনের রেকর্ড রয়েছে সেখানে। একটু দেখতে চাই সেগুলো।’’
গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত একটি অধিবেশনের বিবরণীও দেখতে আগ্রহী রাজ্যপাল। ওই অধিবেশনেই গণপিটুনি প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিলটি পাশ হয়, যা এখনও রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য ঝুলে রয়েছে। এ নিয়ে রাজ্য সরকারের ক্ষোভ সম্পর্কেও রাজ্যপাল অবহিত।
বিধানসভার সচিবালয়ে রাজ্যপালের সফর সংক্রান্ত চিঠি পৌঁছয় এ দিন সকালে। তার পরেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের থাকতে না পারার কথা জানানো হয় রাজভবনে। বিমানবাবু অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করে বলেন, ‘‘রাজ্যপালের সঙ্গে আলাদা করে আমার কোনও কথা হয়নি।’’ অন্যদিকে, রাজ্যপালের বক্তব্য, ‘‘আমি নিজেই যেতে চেয়েছি, তাই স্পিকার আমাকে আন্তরিক ভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। ওঁর আন্তরিকতায় আমি মুগ্ধ। আমার স্ত্রীকে নিয়ে গেলে উনি আরও খুশি হবেন বলেছেন। গণতন্ত্রে এটাই তো সৌজন্য।’’
পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘এখন তো বিধানসভা বন্ধ। সেখানে উনি কী করতে যাবেন?’’ রাজ্যপালের জবাব, ‘‘বিধানসভা চলছে না বলেই আমি গেলে কোনও সমস্যা হবে না।’’ পার্থবাবুর পাল্টা খোঁচা, ‘‘রাজ্যপাল আগে ঠিক করুন রাজভবনের গ্রন্থাগারে কাদের ঢুকতে দেবেন। এ বার ওঁকে ঠিক করতে হবে উনি সাংবিধানিক প্রধান না কি প্রশাসনিক প্রধান হবেন। প্রশাসনিক প্রধান হতে চাইলে ভোটে জিতে আসুন।’’
আজ বিধানসভায় থাকবেন না বলে জানিয়ে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী দু’জনেই বলেন, ‘‘অধিবেশন নেই। আমন্ত্রণও নেই। সকাল সাড়ে ১০টায় আমরা এসে কী করব!’’ বিজেপির পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গাও জানান, ‘‘বিধানসভা তো বন্ধ। যাব কেন?’’