তবলা ঠুকে ক্ষোভ উদ্‌গিরণ রাজ্যপালের

এক দিকে তিনি সরকারের সমালোচনা করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:২৪
Share:

ডোমকলে রাজ্যপাল। বুধবার। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

তিনি যে ‘তাল’-এ ঠিক, তা প্রমাণ করতে চেষ্টার কসুর নেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের।

Advertisement

এক দিকে তিনি সরকারের সমালোচনা করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলছেন। অন্য দিকে, আবার যেচে কালীপুজোয় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে কিংবা হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রীর সাংসদ ভাইপোর সদ্যোজাত পুত্রকে শুভেচ্ছা জানাতেও পৌঁছে গিয়েছেন।

পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা, এ সবই রাজ্যপালের সঠিক ‘তাল-জ্ঞানে’র পরিচয়। বুধবার মুর্শিদাবাদের ডোমকলে গিয়ে হাতে-কলমে তবলা বাজিয়ে নিজেকে ঠিক সেভাবেই চেনালেন ধনখড়।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘কালো পতাকা, কই দেখিনি তো’

ডোমকলে একটি কলেজের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যপাল। তখনই বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময়ে আবহ হিসেবে হাতে তুলে নেন তবলা। প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গে তবলায় চাঁটি মেরে মেরে চলতে থাকে উত্তরপর্ব। যেন কবিগান বা তরজার আসর।

প্রশ্ন ছিল, ডোমকলে আসার পথে আপনাকে কালো পতাকা দেখানো নিয়ে কিছু বলবেন? তবলায় বার কয়েক চাঁটি দিয়ে রাজ্যপাল বললেন, ‘‘আমি তো কোথাও কালো পতাকা দেখিনি। গোটা পথটাই সুন্দর পরিবেশ দেখতে দেখতে এলাম।’’ প্রসঙ্গত, এই বিক্ষোভের বিষয়ে দুপুরেই টুইট করে পুলিশকে বিঁধেছেন রাজ্যপাল।

এ বার প্রশ্ন রাজ্যপালের হেলিকপ্টার ‘না পাওয়া’ নিয়ে। আপনাকে সড়ক পথে আসতে হল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এই জেলাতেই এলেন হেলিকপ্টারে। এ নিয়ে কী বলবেন? ফের চাঁটি পড়ল তবলায়। তাল দিতে দিতে ধনখড় পাল্টা বললেন, ‘হে-লি-ক-প্টা-র!’ তার পরে ‘তাল’-এর রেশ রেখেই মন্তব্য ছুড়ে দিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তো এই জেলাতেই রয়েছেন। ওঁকেই বরং জিজ্ঞাসা করুন, কেন আমাকে হেলিকপ্টার দেওয়া হয়নি।’’

তাল-হীন জবাব ছিল একটিই। তিনি রাজ্য বিজেপির সভাপতির মতো কাজ করছেন বলে শাসক দল যে অভিযোগ তুলেছেন, সে সম্পর্কে তাঁর প্রতিক্রিয়া কী? ‘‘ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না’’ বলে বেরিয়ে যান রাজ্যপাল। তবলা আর না বাজিয়েই।

এ দিকে, রাজ্যপালের হেলিকপ্টার না পাওয়ার ‘ক্ষোভ’ সম্পর্কে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মাননীয় রাজ্যপাল কী ভাবে শিডিউল সাজাচ্ছেন জানি না। তবে মুখ্যমন্ত্রী যে এক দিনে ১৯-২০ কিলোমিটার হাঁটেন, উনিও সে রকম একটু হাঁটুন না! তাতে ওঁর শরীরও ভাল থাকবে।’’

রাজ্যপালের হাঁটার আগাম খবর অবশ্য বুধবারই জানিয়েছে রাজভবন। ২৭ একরের রাজভবন এলাকা ছেড়ে আজ, বৃহস্পতিবার সস্ত্রীক ধনখড় প্রাতর্ভ্রমণে যাবেন বালিগঞ্জ লেক-এ।

হঠাৎ লেকে কেন? কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে জনসংযোগ? গুঞ্জন ও জল্পনা বিভিন্ন মহলে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement