—ফাইল চিত্র।
রাজ্যপালের সম্মতি না মেলায় রাজভবনে আটকে রয়েছে রাজ্যের দু’টি বিল। সেই দুই বিল নিয়ে এ বার রাজ্যের সব পরিষদীয় দলের নেতার সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তবে রাজ্যপালের এমন বৈঠক ডাকার এক্তিয়ারই নেই বলে দাবি করে আলোচনায় না যাওয়ার কথা জানিয়ে দিল শাসক দল তৃণমূল।
বিধানসভায় পাশ হওয়ার পরে রাজ্যপালের সম্মতির অপেক্ষায় আটকে আছে গণপ্রহার প্রতিরোধ বিল। রাজ্যপালের অনুমোদন পাওয়া যায়নি বলে বিধানসভায় পেশ করা যায়নি তফসিলি জাতি ও জনজাতি কমিশন গড়া সংক্রান্ত আর একটি বিল। ওই জোড়া বিল নিয়েই সব দলের পরিষদীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আগামী ১৭ জানুয়ারি বৈঠক করতে চেয়েছেন রাজ্যপাল। কেন তিনি এমন বৈঠক ডাকছেন, সোমবার চিঠি লিখে তা সবিস্তার জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আমন্ত্রণ করেছেন তিনি। ডাক পেয়েছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিজেপির মনোজ টিগ্গা-সহ সব পরিষদীয় নেতাই। বৈঠকের পরে রাজভবনে তাঁদের মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়ন করতে চান রাজ্যপাল।
স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য মনে করছেন, ‘‘রাজ্যপাল পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকতে পারেন না। তিনি এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে এই কাজ করেছেন। এমন কাজ উচিত হয়নি।’’ একই কথা পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যপালের এমন বৈঠক ডাকার এক্তিয়ার নেই। আমরা ওই বৈঠকে যাওয়া প্রয়োজন মনে করছি না।’’ বিরোধী বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য মনে করছেন, সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপাল তাঁদের আলোচনায় ডাকতেই পারেন। তবে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের জন্য তিরুঅনন্তপুরমে থাকায় সুজনবাবু এবং অন্য কর্মসূচিতে দিল্লি যাওয়ার কারণে মান্নান ওই দিনের বৈঠকে যেতে পারবেন না। এই অপারগতার কথা তাঁরা রাজ্যপালকে চিঠি লিখে জানিয়ে দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের পাশে নেই বঙ্গ: সমীক্ষা
রাজ্যপাল আগেই চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, দু’টি বিলের ক্ষেত্রেই কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করার জন্য বিধানসভা এবং রাজ্য সরকারের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা এখনও রাজভবনকে জানানো হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। রাজ্যপালের বক্তব্য, তফসিলি জাতি ও জনজাতির উপরে নির্যাতন আটকাতে কেন্দ্রীয় আইন আছে, কেন্দ্রীয় কমিশনও আছে। রাজ্যের প্রস্তাবিত বিল এবং জাতীয় কমিশনের ফারাক এখনও রাজ্যপালকে বোঝানো হয়নি। এমনকি, এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং মুখ্য সচিবের কোনও বক্তব্য রাজভবন পায়নি। গণপ্রহার প্রতিরোধ বিল পাশ করানোর সময়ে বয়ান বদলানো নিয়ে রাজভবনে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিরোধীরা। রাজ্যপাল তা নিয়ে সরকার এবং বিধানসভার বক্তব্য জানতে চেয়েছিলেন। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই রাজভবনকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যাবতীয় ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। মান্নান ও সুজনবাবু এ দিন বলেন, ‘‘গণপ্রহার সংক্রান্ত বিল নিয়ে আমাদের বক্তব্য অবশ্যই আছে। তবে তফসিলি কমিশন বিলের বিষয়বস্তু আমরা জানি না। বিল তো আমরা দেখিইনি!’’