(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। । —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এমনটাই জানা গিয়েছে রাজভবন সূত্রে। লোকসভা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিংসার অভিযোগ এসেছে। রাজভবন সূত্রে খবর, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আক্রমণ সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ জানতে পেরেছেন রাজ্যপাল। এই বিষয়ে নিজের উদ্বেগ ব্যক্ত করে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন তিনি।
রাজভবনের ওই সূত্রের দাবি, চিঠিতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল। ভোট পরবর্তী হিংসার যে সমস্ত ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, সে বিষয়ে সরকার কী পদক্ষেপ করেছে, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভোট পরবর্তী হিংসার ‘শিকার’ বিজেপি কর্মীদের নিয়ে সম্প্রতি রাজভবন অভিযানে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রথম দিন তাঁরা বাধা পান। পরে তা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। শুভেন্দু আদালতে জানিয়েছিলেন, অনুমতি থাকার পরেও আক্রান্তদের নিয়ে তাঁকে রাজভবন যেতে বাধা দেয় পুলিশ। শুনানিতে আদালত জানিয়ে দেয়, আবার রাজভবন যেতে চাইলে নতুন করে অনুমতি নিতে হবে শুভেন্দুকে। শনিবার সেই অনুমতি পেয়ে রবিবার রাজভবনে যান শুভেন্দুরা। সঙ্গে ছিলেন ভোট পরবর্তী হিংসায় ‘আক্রান্ত’ বিজেপি কর্মীরাও। তাঁদের সঙ্গে দেখা করার পর রাজ্যপাল জানান, মোট ১,০২৫টি অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। এই হিংসার শেষ দেখে ছাড়বেন।
এর পর ওই ‘আক্রান্ত’ বিজেপি কর্মীদের নিয়ে রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চান শুভেন্দু। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ অনুমতি দেয়নি। কারণ, রাজভবনের সামনে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। এর পর ধর্নার অনুমতি চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছেন শুভেন্দু। আদালতে তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ তুলেছেন। নাম না করে জানিয়েছেন, গত অক্টোবরে শাসকদলের এক নেতা রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসেছিলেন। তাঁকে অনুমতি দেওয়া গেলে বিজেপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কেন পুলিশ অনুমতি দেবে না? প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দুর আইনজীবী। আদালত যদিও এ ক্ষেত্রে শুভেন্দুদের কর্মসূচির জন্য বিকল্প জায়গার নাম জানাতে বলেছিল। শুক্রবার রাজভবনের বিকল্প হিসাবে রাজ্য পুলিশের ডিজির দফতরের বাইরে ধর্নায় বসতে চান বলে আদালতে জানিয়েছেন শুভেন্দু।
অনুমতি থাকা সত্ত্বেও শুভেন্দুদের রাজভবনে ঢুকতে বাধা দেওয়ার বিষয়ে নবান্নের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিল রাজভবন। পরে শুভেন্দুদের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যপাল জানিয়ে দেন, রাজভবনের দরজা মুখ্যমন্ত্রীর জন্য বন্ধ। রাজ্য এবং রাজভবনের এই সংঘাতের আবহেই আবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল।