প্রতীকী ছবি।
অসমের ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’-এর সঙ্গে এ রাজ্যে ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’-এর কোনও সম্পর্ক নেই বলে স্পষ্ট জানাচ্ছেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ শব্দটি ঘিরে বিতর্ক থামাতে রাজ্যে ‘জানখালাস’ বন্দিদের শিবিরের নাম বদলানোর চিন্তাভাবনা করছে কারা দফতর। মঙ্গলবার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘রিলিজড প্রিজনার ক্যাম্প’ বলা হতে পারে।
এক কর্তার কথায়, ‘‘অসমে কেন ডিটেনশন ক্যাম্প, তা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তবে এ রাজ্যের ডিটেনশন ক্যাম্প শব্দটি অর্থ ভিন্ন। শব্দের জন্য একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।’’ এই পরিস্থিতিতে এ দিনই সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে হিডকো জানিয়েছে, রাজারহাটে কোথাও ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’-এর জন্য জমি বরাদ্দ করা হয়নি।
সঠিক নথিপত্রের অভাবে এ দেশে আসা কিংবা এ দেশে কোনও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণে বিদেশিদের ঠাঁই হয় জেলেই। কিন্তু কারাবাসের মেয়াদ শেষে যে-সব বিদেশি নিজের দেশে ফিরতে পারেন না, সেই ‘জানখালাস’ বন্দিদের জন্য বন্দিশিবির হবে। তার প্রতিশব্দ ইংরেজিতে ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ হওয়ার কারণেই বর্তমান প্রেক্ষিতে (নয়া নাগরিকত্ব আইন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি সংক্রান্ত আলোচনা) ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। যা কোনওভাবেই চায় না রাজ্য সরকার। তেমনটাই জানাচ্ছেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। এক কর্তার কথায়, ‘‘এখানে বিদেশি বন্দিদের জন্য আলাদা ক্যাম্প হতে পারে। যার সঙ্গে সাধারণ নাগরিকদের কোনও সম্পর্ক নেই। তাই এখানে ডিটেনশন ক্যাম্পের সঙ্গে সাধারণ নাগরিকদের জড়িয়ে দেওয়া ঠিক নয়।’’
আরও পড়ুন: ফের মৃত্যু, অভিযোগ নয়া আইনের দিকেই
‘জানখালাস’ হলেন, সেই সব বিদেশি বন্দি, মামলা থেকে খালাস পাওয়া বা সাজা শেষ হওয়া সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় নথিপত্র তৈরি না হওয়ায় যাঁরা দেশে ফিরতে পারছেন না। নিয়ম অনুযায়ী, স্বদেশে ফেরার বন্দোবস্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁদের বন্দি শিবিরেই থাকতে হবে। কোনও নথি ছাড়া কোনও মুক্ত জায়গায় তাঁদের রাখা যায় না বলেই বন্দি শিবির বা ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’। বর্তমানে এই ধরনের জানখালাস বন্দিদের জন্য ‘রিলিজড প্রিজনার ওয়ার্ড’ রয়েছে দমদম এবং বহরমপুর জেলে।
তবে ওই জানখালাস বন্দিদের জন্য দুটি আলাদা শিবির করার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্যের। একটি বাংলাদেশের বন্দিদের জন্য এবং অন্যটি অন্য সব বিদেশি বন্দিদের জন্য তৈরি হবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে কিছুটা ‘ধীরো চলো’ নীতিতে এগোবে রাজ্য। যদিও কারা দফতরের কর্তারা এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। এমনকি, ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ শব্দটি বর্তমান পরিস্থিতি শুনতেও চাইছেন না তাঁরা।