গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
কৃষ্ণনগরে তরুণীর মৃত্যু মামলায় আগেই বদলানো হয়েছিল তদন্তকারী আধিকারিককে। এ বার সরকারি আইনজীবীও বদল করল রাজ্য। এত দিন ওই মামলায় সরকারি আইনজীবী হিসাবে সওয়াল করছিলেন ব্রজেশ্বর চট্টোপাধ্যায়। এ বার থেকে সওয়াল করবেন সুবেদী সান্যাল।
আদালতের একটি সূত্রে খবর, সরকারি আইনজীবী বদলের বিষয়টি বিভাগীয় নির্দেশ। তবুও আইনজীবী বদলের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। সরকারি সূত্রে দাবি, আরজি কর-কাণ্ডের আবহে কৃষ্ণনগরে তরুণীর ‘রহস্যমৃত্যু’ও একটি স্পর্শকাতর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল তাঁর পরিবার। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সে রকম কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। আগুনে পুড়েই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সেই রিপোর্টে। কৃষ্ণনগরের ঘটনার তদন্তে প্রশাসনের বিরুদ্ধে যাতে কোনও ভাবে গাফিলতির অভিযোগ না ওঠে, তা নিশ্চিত করতে সরকারি আইনজীবীও বদল করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যদি উচ্চ আদালতে মামলা হয়, সরকার পক্ষ যাতে সব রকম ভাবে প্রস্তুত থাকতে পারে, তা নিশ্চিত করতেই সুবেদীর মতো একজন ‘বলিষ্ঠ’ আইনজীবীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সরকারি আইনজীবী বদলের বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখছে না অভিযুক্ত যুবকের পরিবার। যুবকের মা বলেন, ‘‘শুধুমাত্র সন্দেহের বশে আমার ছেলেকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আইনজীবী বদল হলেও আইনের তো বদল হচ্ছে না। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের আস্থা আছে।’’
সাত দিনের পুলিশি হেফাজত শেষে বুধবার অভিযুক্ত যুবককে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। সরকারি কৌঁসুলি সুবেদী আদালতে বলেন, ‘‘সিট গঠন করে তদন্ত চলছে। ফরেন্সিক, রাসায়নিক, হিস্টোপ্যাথলজিক্যাল এবং পদার্থ বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে তদন্তে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা দফায় দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। যার রিপোর্ট এখনও এসে পৌঁছয়নি। রিপোর্ট হাতে এলে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলতে পারে।’’ অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবী পাল্টা বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কোথাও খুনের কথা উল্লেখ নেই। তাই আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা ভিত্তিহীন।’’ দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে কৃষ্ণনগর জেলা আদালতের মুখ্য দায়রা বিচারক সঞ্জয় চৌধুরী অভিযুক্তের পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন।