—ফাইল চিত্র।
কাগজে-কলমে তিনি বিধানসভার স্থায়ী কর্মী। কাজ করেন এক বিধায়কের গৃহকর্মী হিসেবে! বিধায়কের বাড়ির ২৪ ঘণ্টার কর্মী হিসেবে কাজ করলেও প্রতি মাসে ওই ব্যক্তি কিন্তু বেতন পাচ্ছেন বিধানসভা থেকেই।
প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার সোনালী গুহর ব্যক্তিগত সহায়ক (অ্যাটেনডেন্ট) হিসেবে ওই ব্যক্তি বিধানসভায় চাকরি পান কয়েক বছর আগে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই গ্রুপ ডি-র স্থায়ী কর্মীও হন বছর তিরিশের ওই সহায়ক। ডেপুটি স্পিকার থাকাকালীন সরোজ বিধানসভার পাশাপাশি সোনালীদেবীর বাড়িতেও সারাক্ষণ থাকতেন। তখনও তাঁর বাড়িতে সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। এখন সোনালীদেবী ডেপুটি স্পিকার নন। শুধুই বিধায়ক। সোনালীদেবী অকপটে বলেন, ‘‘আমি ডেপুটি স্পিকার থাকার সময় থেকেই উনি আমার বাড়িতেই রয়েছেন। এখনও সব সময় বাড়িতেই থাকেন। মেয়ের দেখাশোনা করেন, স্কুলেও নিয়ে যান, নিয়ে আসেন।’’ বাড়ির কাজে বহালের জন্য ব্যক্তিগত ভাবে সরোজকে বেতনও দেন না সোনালীদেবী। তাঁর কথায়, ‘‘বিধানসভা থেকেই বেতন পান উনি।’’
কিন্তু সরকারি কর্মী কী ভাবে একজন বিধায়কের গৃহকর্মী হিসেবে বহাল রয়েছেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিধানসভায় গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সোনালীদেবীর যুক্তি, ‘‘স্পিকার তো গোটা ব্যাপারটাই জানেন। উনি তো আমাকে কিছু বলেননি!’’ যদিও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আমি বিষয়টা জানি না। আর ডেপুটি স্পিকার পদে থাকাকালীন চাইলে সবসময় অ্যাটেনডেন্ট রাখতেই পারেন। সেটা নিয়মের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু ডেপুটি স্পিকার না থাকলেও সেই অ্যাটেনডেন্টকে বাড়িতে তিনি রাখতে পারেন কি না, কী কী সুযোগ-সুবিধা তিনি পান, তা দেখতে হবে।’’
সরকার পক্ষের প্রাক্তন মুখ্য সচেতক ও বর্তমান বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও মনে করেন, পদে না থাকলে ডেপুটি স্পিকার ব্যক্তিগত সহায়ককে বাড়িতে রাখলে তা বিধিসম্মত নয়। তবে আইন বহির্ভূত ভাবে কী ভাবে সোনালীদেবীর বাড়িতে সরকারি কর্মীকে কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। বিধানসভায় গরহাজির একজন কর্মীকে কী ভাবে গত এক বছর ধরে বেতন দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।