অভিযুক্ত: উত্তম মোহান্ত খুনে গ্রেফতার মেয়ে শ্বেতা। —নিজস্ব চিত্র।
বাবাকে খুনের চক্রান্তে জড়িয়ে ছিলেন মেয়েও। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশের প্রাথমিক ভাবে তেমনই ধারণা। শ্বেতা মোহান্ত ওরফে তুলি নামে ওই তরুণী দিনহাটা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
জলপাইগুড়ির কদমতলা এলাকার বাসিন্দা, বিমা সংস্থার কর্মী উত্তম মোহান্ত মারা যান ২৯ জুন। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলেই পুলিশের ধারণা। তাঁর স্ত্রী লিপিকা ও লিপিকার প্রেমিক অনির্বাণ রায় নামে এক যুবক উত্তমবাবুকে খুন করেছেন বলে অভিযোগ। লিপিকাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনির্বাণ এখনও ফেরার। গ্রেফতার করা হয়েছে ধনঞ্জয় চতুর্বেদী নামে এক আয়ুর্বেদ চিকিৎসককেও। তিনিই টাকা নিয়ে উত্তমবাবুর মৃত্যুর শংসাপত্র লিখে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
তবে শ্বেতা বলেন, ‘‘মা ও আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমরা কোনও ষড়যন্ত্র করিনি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বাবার স্বাভাবিক মৃত্যুই হয়েছে। তাঁকে অত্যাচারও করা হত না। তিনিই বরং মদ খেয়ে মাতলামো করে আমাদের সম্মান নষ্ট করতেন।’’
তবে ইঙ্গিত মিলেছে, উত্তমবাবুকে বিষ খাইয়ে মারা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শ্বেতাকে দফায় দফায় জেরার পরে পুলিশের ধারণা, তিনিও সেই ষড়যন্ত্রের কথা জানতেন। বিকেলে তাঁকে গ্রেফতার করে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ৷ পুলিশ জানিয়েছে, খুনের ষড়যন্ত্রে সামিল থাকার পাশাপাশি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অনেক তথ্য চেপে যাওয়াতেই শ্বেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ শুক্রবার তাঁকে জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হবে৷
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, গত চার-পাঁচ বছর ধরে উত্তমবাবুর স্ত্রী লিপিকা অনির্বাণের সঙ্গে দু’বার পালিয়ে যান৷ প্রথমবার উত্তমবাবুর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় নয় লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়েছিলেন তাঁরা। সেই সময় শ্বেতাও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। তখন শ্বেতা নাবালিকা ছিলেন। বছর খানেক আগে দ্বিতীয়বার পালান লিপিকা ও অনির্বাণ৷ তবে এবার আর শ্বেতাকে সঙ্গে নেননি তাঁরা৷ মাস দুই-আড়াই আগে ফিরে এসে লিপিকা ও অনির্বাণ উত্তমবাবুর উপরে অত্যাচার শুরু করেন বলে অভিযোগ৷ পুলিশের এক কর্তার দাবি, এই অত্যাচারের অনেকগুলির ঘটনারই সাক্ষী শ্বেতা, উত্তমবাবুর মৃত্যুর সময়ও তিনি ওই বাড়িতেই ছিলেন।