গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
প্রায় দেড় মাস ধরে সাত দফায় ভোটগ্রহণ। শেষ হয়েছে সপ্তদশ লোকসভার নির্বাচন। আজ গণনা। সারা দেশ তো বটেই, তার সঙ্গে রাজ্য রাজনীতিতেও বেশ কিছু সমীকরণ বদলের ইঙ্গিত বুথফেরত সমীক্ষায়। বুধবার সকাল ৮টা থেকে পোস্টাল ভোট দিয়ে শুরু হচ্ছে ভোটগণনা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হতে থাকবে, আগামী পাঁচ বছর কার হাতে থাকবে দেশের ভাগ্য। একই সঙ্গে ফুটে উঠবে রাজ্য রাজনীতির নয়া চিত্রও।
বুথফেরত সমীক্ষা নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তোলার পর্বে ভাটা পড়েছে। এখন নজর শুধুই ইভিএম-এ। সারা দেশের সঙ্গে অধীর প্রতীক্ষা বাংলাতেও। কী হতে পারে ফল? তৃণমূল-বিজেপি, কার ঝুলিতে কত আসন যেতে পারে? বাম-কংগ্রেস কি আরও শক্তি হারাচ্ছে, নাকি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? ইভিএম-এ কি কারচুপি হয়েছে বা সেটা কি করা সম্ভব? অলিতে-গলিতে, বাসে-ট্রেনে, পাড়ার মোড়ের জটলা থেকে চায়ের দোকান— সর্বত্র এক আলোচনা, পর্যালোচনা, বিশ্লেষণ, জল্পনা। সব কিছুর অবসান ঘটবে আজ, বুধবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই।
বুথফেরত পরীক্ষার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে, এ রাজ্যে কি সত্যিই কুঁড়ি থেকে প্রস্ফুটিত হচ্ছে পদ্ম? আসন বাড়ছে বিজেপির? সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কারণ? ২০১৪ সালের লোকসভা ভোট পর্যন্ত এ রাজ্যে বামেরাই ছিল প্রধান বিরোধী শক্তি। এমনকি, ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটেও দ্বিতীয় স্থানেই ছিল বামেরা। কিন্তু তার পর থেকেই ধীরে ধীরে কার্যত পিছনের সারিতে চলে গিয়েছে বামেরা। শাসক দল তৃণমূলের মূল প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে এসেছে গেরুয়া শিবির।
বুথফেরত সমীক্ষার দিকে নজর রাখলেও দেখা যাবে, ঘাসফুল ক্ষয়িষ্ণু এবং পদ্মের বাড়বাড়ন্ত। একমাত্র নিউজ ১৮-আইপিএসওএস-এর সমীক্ষায় তৃণমূলের আসন ৩৪ থেকে বেড়ে ৩৬ হতে পারে বলে ইঙ্গিত। বাকি সব কটি সমীক্ষাতেই উঠে এসেছে তৃণমূলের আসন কমার সম্ভাবনা। কেউ বলছেন, ১০টি কমবে, কারও ইঙ্গিত ১২ থেকে ১৫টা পর্যন্ত আসন হারাতে পারে তৃণমূল। বিজেপির পক্ষে কেউ দিচ্ছেন ১০, কেউ ১২। কারও মতে ২০ থেকে ২২টি আসন পাওয়াও নাকি সম্ভব বিজেপির পক্ষে। কংগ্রেসের আসন কমতে পারে, ঝুলি শূন্য হতে পারে বামেদের— পূর্বাভাস সমীক্ষাগুলিতে।
আরও পড়ুন: ভোটের ফল প্রকাশের পর হিংসা রুখতে রাজ্যে ২০ হাজার আধাসেনা
আরও পডু়ন: ক্যাম্প অফিস করা নিয়ে মন্ত্রী-এসপি বচসা, মন্ত্রীর হুমকিতেও অনড় পুলিশকর্তা
কিন্তু সে সব সমীক্ষা কার্যত পিছনের সারিতে চলে গিয়েছে ইভিএম-এ কারচুপি এবং পাল্টানোর অভিযোগকে ঘিরে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সব বুথফেরত সমীক্ষাগুলিকে যেমন ‘গসিপ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন, তেমনই ইভিএম পাল্টানোর আশঙ্কায় স্ট্রং রুমের সামনে পাহারার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় কর্মীদের। শুধু নিজের দল তৃণমূল নয়, সারা দেশেই জোটের শরিক দলের শীর্ষনেতা-নেত্রীদেরও একই কথা বুঝিয়েছেন। তার পর থেকেই বুথফেরত সমীক্ষার পাশাপাশি চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ইভিএম।