স্কুল সাফাইয়েও ১০০ দিনের কর্মী

এই সিদ্ধান্তের দু’রকম প্রতিক্রিয়া হয়েছে। শিক্ষা শিবিরের একটি অংশ মনে করছে, এতে স্কুল-চত্বর অপরিষ্কার থাকার সমস্যা মিটবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০২:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

অনেক কাজই করানো হয় ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে যুক্ত কর্মীদের দিয়ে। সেই তালিকায় জুড়তে চলেছে স্কুল ও স্কুল-চত্বরের জঞ্জাল সাফাইও। এই উদ্যোগ রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের। ওই দফতরের অধীন সমগ্র শিক্ষা মিশন বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের কর্মীরা এ বার স্কুল সাফাইয়ের কাজও করতে পারবেন।

Advertisement

এই সিদ্ধান্তের দু’রকম প্রতিক্রিয়া হয়েছে। শিক্ষা শিবিরের একটি অংশ মনে করছে, এতে স্কুল-চত্বর অপরিষ্কার থাকার সমস্যা মিটবে। শিক্ষা মহলেরই অন্য অংশের মতে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের কর্মীদের দিয়ে স্কুল সাফাইয়ের কাজ করালে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না। কারণ, ওই কর্মীদের দিয়ে নিয়মিত সাফাইয়ের কাজ করানো যাবে না। এর জন্য স্কুলে স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা দরকার।

স্থায়ী সাফাইকর্মী আছেন সরকারি স্কুলে। কিন্তু সরকার পোষিত বা সরকার সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে নেই। বেশির ভাগ স্কুলের কর্তৃপক্ষই নিজেরা তহবিল গড়ে সাফাইকর্মী নিয়োগ করেন। গ্রামাঞ্চলে কোনও কোনও স্কুলে গ্রুপ-ডি কর্মীরা সাফাইয়ের কাজ করেন। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্কুল সাফাই ঠিকমতো হয় না বলে অভিযোগ। মিত্র ইনস্টিটিউশন (মেন)-এর প্রধান শিক্ষক আনিসুল রহমান বললেন, ‘‘স্কুলে আমরা নিজেরাই তহবিল গঠন করে সাফাইকর্মী রাখি। কিন্তু এত বড় স্কুল সাফ করার জন্য যত সাফাইকর্মী দরকার, স্কুলের তহবিল থেকে তত লোক রাখা খুবই কঠিন।’’ হেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল দাস বলছেন, ‘‘আমাদের সরকারি স্কুলে এক জন সরকারি সাফাইকর্মী আছেন ঠিকই। কিন্তু এক জন সাফাইকর্মীর পক্ষে পুরো স্কুল সাফ করা খুব কঠিন। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প থেকে কর্মী নিয়োগের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।’’

Advertisement

১০০ দিনের কাজ প্রকল্প থেকে কর্মী নিয়োগ করে স্কুলের জঞ্জাল-সমস্যার আদৌ কতটা স্থায়ী সমাধান করা যাবে, তা নিয়ে সংশয়ে শিক্ষা শিবিরের একটি অংশ। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘স্থায়ী সাফাইকর্মী নিয়োগ করা দরকার। তা হলে স্কুলে নিয়মিত সাফাই হবে। ১০০ দিনের প্রকল্পের কর্মীরা স্কুলের কর্মী নন। বাইরে থেকে স্কুলে সাফাইয়ের কাজ করবেন। তাতে পড়ুয়াদের, বিশেষত ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।’’ পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতি সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকারের মতে, এই ব্যবস্থা মন্দের ভাল। তবে মাধ্যমিক স্তরের স্কুল যত বড়, তাতে একাধিক স্থায়ী সাফাইকর্মী দরকার। ‘‘১০০ দিনের কাজের সাফাইকর্মীরা হয়তো স্কুল-চত্বর পরিষ্কার রাখবেন। কিন্তু ক্লাস, শৌচালয় সাফ রাখতে দরকার স্থায়ী সাফাইকর্মী। স্কুলে কম্পিউটার-সহ নানা দামি জিনিস থাকে। তাই স্থায়ী কর্মীও দরকার,’’ বলেন নবকুমারবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement