সুবোধ সিংহ। —ফাইল চিত্র
আসানসোল আদালত থেকে আসানসোল সংশোধনাগারে পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় এক সিআইডি অফিসারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল গ্যাংস্টার সুবোধ সিংহের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে সুবোধের বিরুদ্ধে আসানসোল দক্ষিণ থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে সিআইডির পক্ষ থেকে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি সেন্ট্রাল ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘সিআইডির পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত শুরু করছি।’’
রাজ্যের নানা স্বর্ণবিপণিতে ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত গ্যাংস্টার সুবোধকে রবিবার বিহারের জেল থেকে এ রাজ্যে নিয়ে এসেছিলেন তদন্তকারীরা। ওই দিনই আসানসোল আদালতে হাজির করানো হয়েছিল তাঁকে। গ্যাংস্টারকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে সিআইডি আবেদন করলেও তা ধোপে টেকেনি! সুবোধকে জেল হেফাজতে পাঠিয়ে ফের সোমবার আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। কিন্তু সোমবার তাঁকে ফের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। বিচারক শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, নিয়ম মেনে আগামী ৩ জুলাই আদালতে হাজির করাতে হবে সুবোধকে। তার আগে দু’দিন তাঁকে আসানসোল সংশোধনাগারেই রাখতে হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, আদালতের নির্দেশ মেনে সুবোধকে আসানসোল সংশোধনাগারে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন সিআইডি আধিকারিকেরা। অভিযোগ, জেল চত্বরে তাঁকে গাড়ি থেকে নামানোর সময়েই এক সিআইডি আধিকারিককে হুমকি দেন গ্যাংস্টার। কিন্তু তদন্তকারী অফিসারকে সুবোধ কী বলেছেন, তা অবশ্য এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।
আদালত সূত্রে খবর, সুবোধকে কোর্টে হাজির করানোর পরোয়ানা জারি করেছিল আসানসোল আদালত। নির্দেশ দিয়েছিল, আগামী ৩ জুলাই তাঁকে হাজির করাতে হবে। সুবোধ বিহারের বেউর জেলে বন্দি থাকায় তাঁকে কোর্টে হাজির করানোর প্রাথমিক দায়িত্ব ছিল জেল কর্তৃপক্ষের উপর। কিন্তু রবিবার সিআইডি বিহারের জেল থেকে সুবোধ নিয়ে এসে কোর্ট হাজির করায়। ‘নিয়মভঙ্গ’ হওয়ায় কোর্ট গ্যাংস্টারকে জেল হেফাজতে পাঠায়। সোমবার আসানসোল আদালতে কর্মবিরতি চলছে। তার ফলে আইনজীবীরা আদালতে হাজির থাকলেও শুনানিতে অংশ নেননি। তাই সোমবার সুবোধ নিজেই লিখিত আকারে বক্তব্য পেশ করেন। তাঁর প্রশ্ন, তাঁকে ৩ জুলাই হাজির করানোর কথা থাকলেও কেন আগে তাড়াহুড়ো করে পর পর দু’দিন হাজির করানো হল? শুনানি প্রক্রিয়ায় অংশ না নিলেও সুবোধের আইনজীবী মহম্মদ খুরশিদ জানান, সুবোধকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়নি। জেল থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। জেল থেকে আনা মানে ‘কাস্টডি প্রোডাকশন’। আর তা হওয়ার কথা ৩ জুলাই। আর তা ছাড়া আইনজীবীরা যখন শুনানি প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন, তখন কী যুক্তিতে সিআইডি হেফাজত দেওয়া যেতে পারে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন সুবোধের আইনজীবী।
সিআইডির আইনজীবী আদালতে পাল্টা দাবি করেন যে, বেশ কয়েকটি রাজ্যে সুবোধের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তাঁকে নিয়ে আসার জন্য কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। সুবোধকে সিআইডি হেফাজতে দেওয়া হলে তদন্ত অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারবে। এ ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যারাকপুরেও দু’টি মামলা রয়েছে। সেখানেও কোর্টে হাজির করাতে হবে। যদিও এই যুক্তি শুনতে চাননি বিচারক। সুবোধকে পূর্বনির্ধারিত দিনেই হাজির করানোর নির্দেশ দেন তিনি।