বুধবার, গঙ্গাসাগর মেলার জনসমাগম লক্ষ ছাড়িয়েছে বলেই প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের দাবি। ফাইল চিত্র।
উদ্বোধনের আগে থেকেই আসতে শুরু করেছিলেন পুণ্যার্থীরা। বুধবার, গঙ্গাসাগর মেলার জনসমাগম লক্ষ ছাড়িয়েছে বলেই প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের দাবি। এ দিকে, মেলার শুরুতেই এ দিন ঘটেছে একাধিক বিপত্তি। ভিড়ের মধ্যে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক পুণ্যার্থীর। দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন কয়েক জন।
মঙ্গলবার মেলার উদ্বোধন করেছেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত। করোনা পরিস্থিতিতে গত দু’বছর নানা বিধিনিষেধের মধ্যে মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। এ বার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। প্রশাসনের আশা, অন্তত ৪০ লক্ষ মানুষ আসবেন।
কী পরিমাণ ভিড় হতে পারে, তার আভাস মিলেছে বুধবারেই। বিশাল মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় এখনও সে অর্থে উপচে পড়েনি ঠিকই, কিন্তু জমায়েত-ঠেলাঠেলির ছবি দেখা গিয়েছে বহু জায়গায়।
কাকদ্বীপের লট-৮ ঘাট, সাগরের কচুবেড়িয়ার মতো জায়গায় ঠাসাঠাসি ভিড় চোখে পড়েছে। ভেসেল, বাসেও ভিড় ছিল।
মঙ্গলবারই মেলার ভিড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক মহিলা। এ দিনও একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মহারাষ্ট্র থেকে আসা বছর পঁচাত্তরের এক বৃদ্ধার। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ কচুবেড়িয়া ভেসেল ঘাটে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরার বাসিন্দা ওই মহিলার নাম আশা অশোক কোরিয়ার। এ দিন ভেসেল জেটিঘাটে আসার পরে পুণ্যার্থীরা একে একে উপরে উঠে আসছিলেন। সে সময়ে মাটিতে পড়ে যান ওই বৃদ্ধা। তাঁর জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করেন স্থানীয় মানুষ। পরে পুলিশ এসে বৃদ্ধাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাড়ির লোকজনকে খবর দিয়েছে পুলিশ।
এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ সাগরের কৃষ্ণনগর বিনোদমোড়ের কাছে একটি গাড়ির সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্সের ধাক্কায় জখম হন ৬ জন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাম্বুল্যান্সটি সাগর থেকে কচুবেড়িয়ার দিকে আসছিল। পুণ্যার্থী নিয়ে যাত্রিবাহী গাড়িটি গঙ্গাসাগরে যাচ্ছিল।
বিনোদ মোড় বাসস্ট্যান্ডের কাছে অ্যাম্বুল্যান্সটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িতে ধাক্কা মারে। গাড়ির চালক, পুণ্যার্থী-সহ ছ’জন জখম হন। আহতদের সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় কাকদ্বীপ হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় দু’জনকে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অ্যাম্বুল্যান্স চালক মত্ত থাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
মধ্যপ্রদেশ থেকে এসেছেন বছর বাষট্টির গীতা ত্রিবেদী। রাত ৮টা নাগাদ লট-৮ ঘাটে ভেসেলে ওঠার সময়ে ভিড়ের মধ্যে পড়ে যান তিনি। পায়ের হাড় ভেঙেছে। পুলিশ তাঁকে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁকে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও পাঠানো হয়েছে।