গামা রশ্মি জীবাণু ধ্বংস করবে, রুখবে অঙ্কুরোদগমও
সারা বছর হিমসাগর!
যদি সত্যিই এমনটা হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কেন নয়? কমলালেবু তো শুধু শীতকালেই হয়। তবু আজকাল সারা বছরই বাজারে কমলালেবু মেলে। পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও বিষয়টা প্রায় এক। গোটা বছর বাজার দখল করে রয়েছে নাসিকের পেঁয়াজ। যদিও এ রাজ্যে যে পেঁয়াজ কম হয়, তা কিন্তু নয়।
কী ভাবে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, ফসলকে সারা বছর সতেজ রাখতে শুধুমাত্র হিমঘরে রাখলেই চলে না। কারণ সেখান থেকে বের করে বাজারে নিয়ে যাওয়ার পথেই দিন তিনেকের মধ্যে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে পচে যেতে পারে ফসল। এর থেকে বাঁচাতে দরকার ‘গামা রশ্মি’। হিমঘরে রাখার আগে ফসলকে ‘গামা সেন্টার’-এ রেখে জীবাণুমুক্ত করে নিলেই কেল্লা ফতে! সে ক্ষেত্রে হিমঘর থেকে বের করলেও পচন ধরার কোনও আশঙ্কা থাকে না। আর এ ভাবেই নাসিকের পেঁয়াজের দেশ জয়। এমনকী, গামা রশ্মির প্রয়োগে ফল-সব্জি দ্রুত পাকে না। অঙ্কুর গজিয়ে নষ্টও হয় না তাড়াতাড়ি। এ বার বাংলাতেও এ সব বাস্তবায়িত করতে ‘ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার’ (বার্ক)-এর সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বিসিকেভি) তাদের ক্যাম্পাসে তৈরি করছে আঞ্চলিক পরমাণু-কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। যা কিনা পূর্ব ভারতে এই প্রথম।
এই কেন্দ্রে গোটা দেশের কৃষিবিজ্ঞানীদের সঙ্গে যৌথ ভাবে গবেষণা করবেন বার্কের বিজ্ঞানীরা। আজ, সোমবার সেই পরমাণু কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন ‘ইন্ডিয়ান অ্যাটমিক এনার্জি কমিশন’-এর চেয়ামম্যান শেখর বসু। গবেষণা কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছেন বিসিকেভি-র বংশগতি ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক তথা বিজ্ঞানী সোমনাথ ভট্টাচার্য। কিন্তু এ পদ্ধতিতে ফসল সংরক্ষণের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই তো? সোমনাথবাবু বলেন, ‘‘ফসল অনুযায়ী নির্দিষ্ট মাত্রায় গামা রশ্মির প্রয়োগ শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর নয়। তা ছাড়া এই সব বিষয় নিয়েই গবেষণা হবে এখানে। মতামত নেওয়া হবে চিকিৎসকদেরও। বার্ক আগে যে সব শস্য বাজারে ছেড়েছে, তা সব রকম পরীক্ষার পরই ছাড়পত্র পেয়েছে।’’
কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজির বিভাগীয় প্রধান কুহু পালের মতে, ‘‘এই পদ্ধতি মোটেই ক্ষতিকর নয়। কারণ, গামা রশ্মি কেবলমাত্র ব্যাক্টেরিয়া নিধনেই কাজে লাগছে। ক্ষতিকর রাসায়নিক বা প্রিসারভেটিভের মতো তা শস্য বা ফলের মধ্যে থেকে যাচ্ছে না। ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনও আশঙ্কাই নেই।’’ কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজির বিভাগীয় প্রধান কুহু পালের মতে, ‘‘এই পদ্ধতি মোটেই ক্ষতিকর নয়। কারণ, গামা রশ্মি কেবলমাত্র ব্যাক্টেরিয়া নিধনেই কাজে লাগছে। ক্ষতিকর রাসায়নিক বা প্রিসারভেটিভের মতো তা শস্য বা ফলের মধ্যে থেকে যাচ্ছে না। ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনও আশঙ্কাই নেই।’’