এখন থেকে বিধায়ক বা সাংসদদের আর পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের ভোটে লড়তে বাধা থাকবে না। একই ভাবে পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদের সদস্যরাও বিধানসভা বা লোকসভার ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। বিধানসভায় শুক্রবার ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল পঞ্চায়েত ইলেকশনস (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৭’ পাশ করে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিলেন যে, পুরসভার মতো এখন থেকে ইস্তফা না দিয়েই পঞ্চায়েতের সদস্যরা বিধায়ক বা সাংসদ হতে পারবেন।
তবে বিধায়ক বা সাংসদরা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হতে পারবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। পঞ্চায়েত কর্তাদের বক্তব্য, ‘‘এ সব খুঁটিনাটি ঠিক করা হয় বিধি তৈরির সময়ে। ফলে এখনই বলার সময় আসেনি বিধায়ক, সাংসদরা পঞ্চায়েতের পদাধিকারী হতে পারবেন কি না।’’ বর্তমান আইনে রয়েছে, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সহকারী সভাধিপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহকারী সভাপতিরা পূর্ণ সময়ের জন্য কাজ করেন। অর্থাৎ অন্য কোনও পেশায় থাকলে তা থেকে অব্যাহতি নিয়ে এই পদে যোগ দিতে পারেন। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, এই পদগুলি আর পূর্ণ সময়ের থাকছে না। অর্থাৎ, অন্য পেশায় থেকেও এখন জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির পদাধিকারী হওয়া যাবে। যে কোনও একটি জায়গা থেকে তাঁরা বেতন নিতে পারবেন।
প্রশ্ন উঠেছে, বিধায়ক, সাংসদরা পদাধিকার বলে এমনিতেই ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সদস্য। এখন তাঁরাই যদি সরাসরি সমিতি বা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হন, তা হলে পঞ্চায়েতি ব্যবস্থায় তাঁদের ভূমিকা ঠিক কী হবে। পঞ্চায়েত কর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, এ ক্ষেত্রে পদাধিকার বলে থাকা এবং সরাসরি নির্বাচিত হওয়া— এই দু’টি চরিত্রই বজায় থাকবে। সমিতির সভাপতি ও সহকারী সভাপতি এবং পরিষদের সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি নির্বাচনে এঁরা সরাসরি (সংশ্লিষ্ট এলাকায় পঞ্চায়েতে জয়ী প্রার্থী হিসেবে) ভোট দিতে পারবেন। আবার যখন সমিতি বা পরিষদের স্থায়ী কমিটি গঠন হবে, তখন পদাধিকার বলেও তাঁদের ভোটাধিকার থাকবে। যদি কোনও বিধায়ক তাঁর নিজের কেন্দ্রেই সমিতি বা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন, সে ক্ষেত্রে তাঁর পঞ্চায়েত সদস্য হিসেবেই ভোটাধিকার থাকবে। সে ক্ষেত্রে তাঁর পদাধিকার বলের ক্ষমতা প্রযোজ্য হবে না।