সিপিএমের মতো সাংগঠনিক বিষয়ে বিশেষ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকও। সব ঠিক থাকলে নভেম্বরে কলকাতায় যখন সিপিএমের প্লেনাম বসবে, তার কাছাকাছি সময়ে শহরে বসবে ফব-র বিশেষ সম্মেলনও। যেখানে দলের সর্বভারতীয় নেতৃত্বে বদলের সম্ভাবনা প্রবল বলে সূত্রের ইঙ্গিত।
দুই সম্মেলন বা পার্টি কংগ্রেসের মাঝের সময়ে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হলে কাউন্সিল অধিবেশন ডাকার সংস্থান আছে ফব-র গঠনতন্ত্রে। তাদের বিগত রাজ্য সম্মেলন ও পার্টি কংগ্রেস হয়েছে ২০১৩ সালে। দলের জাতীয় ও রাজ্য কাউন্সিলের অধিবেশন করা নিয়ে ফব-র অন্দরে চর্চা চলছিল কিছু দিন ধরেই। শনি ও রবিবার কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, শেষ পর্যন্ত সংগঠনের বিষয়ে কিছু জরুরি সিদ্ধান্ত নিতে জেলা, রাজ্য ও জাতীয় স্তরে বিশেষ সম্মেলন ডাকা হবে। কাউন্সিলের অধিবেশন নয়। ফলে কাউন্সিলের চেয়ে বেশি সংখ্যায় দলের সর্বস্তরের প্রতিনিধিরা বিশেষ সম্মেলনে অংশ নিতে পারবেন। দলের ৭৫ বছর পূর্তির সময়েই পরিকল্পনা হচ্ছে বিশেষ সম্মেলনের। জাতীয় স্তরে দলের ৭৫ বছর পূর্তিতে বড় কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘আলোচনা করে ঠিক হয়েছে, অগস্টে বিশেষ সম্মেলনের কথা বলা হবে জেলাগুলিকে। তার পর অক্টোবরের মধ্যে রাজ্যের সম্মেলন সেরে নভেম্বরে সম্ভবত কলকাতাতেই হবে জাতীয় স্তরের সম্মেলন। তবে দিনক্ষণ ঠিক হয়নি।’’ অক্টোবরে রাজ্যে চলবে উৎসবের মরসুম। তার মধ্যে রাজ্যে বিশেষ সম্মেলন করা নিয়ে দলের একাংশের সংশয় আছে। দলের অন্য অংশের বক্তব্য, এমন নানা যুক্তি দেখিয়েই কাউন্সিল অধিবেশন দীর্ঘদিন ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে! আগামী বছর বিধানসভা ভোট। তাই নভেম্বরের মধ্যেই যা করার, করতে হবে।
১৯৪৬ সাল থেকে ফব-র রাজ্য সম্পাদক পদে আছেন অশোক ঘোষ। গত রাজ্য সম্মেলন ওপার্টি কংগ্রেসের আগে তিনি পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা বলেছিলেন। কিন্তু তাঁর সেই ‘ইচ্ছা’ বাস্তবায়িত হয়নি। এ বার কেন্দ্রীয় কমিটিতে অশোকবাবু ফের সেই প্রস্তাব দিয়েই বিশেষ সম্মেলনের কথা বলেছেন বলে। দলের একাংশ অশোকবাবুর চেয়ে বেশি আগ্রহী সর্বভারতীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন নিয়ে। তাঁরা চান, দেবব্রত বিশ্বাসের জায়গায় বিশেষ সম্মেলন থেকেই ফব-র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিন বর্তমান জাতীয় সম্পাদক জি দেবরাজন।
শরিক হিসাবে বামফ্রন্টের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়মিত যোগ দিলেও দল হিসাবে ফব কেন কোনও আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এ বার কেন্দ্রীয় কমিটিতে। কেন্দ্রীয় স্তরে দলের সক্রিয়তা কমে যাওয়া নিয়েও অনেকে সরব হন বলে দলীয় সূত্রের খবর। সাধারণ সম্পাদক দেবব্রতবাবু অবশ্য কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়ে রবিবার মুখ খুলতে চাননি। দলের তরফে আজ, সোমবার তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন।