লাগাতার ভোটে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়েছে সংগঠন। সুযোগ বুঝে বিভিন্ন জেলায় দল ছেড়ে শাসক শিবিরে নাম লিখিয়েছেন কর্মী-সমর্থকেরা। ছেড়ে যাওয়া সেই বাহিনীকেই ঘরে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছেন বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের নতুন রাজ্য নেতৃত্ব।
রাজ্যে সামনে রয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। জেলায় জেলায় বেশ কিছু পুরভোটও রয়েছে বিক্ষিপ্ত ভাবে। এই সময়টাকেই কাজে লাগিয়ে দলত্যাগী কর্মী-সমর্থকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়। সেই ১৯৪৮ সালের পরে ফব-য় আর রাজ্য সম্পাদক পদে বদল হয়নি! প্রবীণ নেতা অশোক ঘোষের মৃত্যুর পরের এক বছর স্থায়ী সম্পাদকও ছিলেন না। সব মিলিয়ে দীর্ঘ দিন দলের নেতৃত্বে যেমন স্থবিরতা এসেছে, তেমনই তৃণমূল স্তর খালি হয়ে গিয়েছে। সেই স্রোতেই এখন বাঁধ দিতে চাইছেন নরেনবাবুরা।
দায়িত্ব নেওয়ার পরেই বীরভূম জেলায় বেশ কিছুটা সময় দিয়েছেন নরেনবাবু। পরবর্তী লক্ষ্যে কোচবিহার। তার পরে আরও কয়েকটি জেলার কিছু এলাকা। প্রাথমিক ভাবে ফ ব নেতৃত্বের মনে হয়েছে, বামেরা ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পরে ঝাঁকে ঝাঁকে কর্মী-সমর্থকেরা দল ছেড়ে গেলেও তৃণমূলে সকলের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। সকলেই শাসক দলে গিয়ে গুছিয়ে নিতে পেরেছেন, এমন নয়। তৃণমূল দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার পরে সেখানে বিক্ষুব্ধের সংখ্যাই বরং বাড়ছে। আবার বিজেপি-ও জেলায় জেলায় চোখে পড়ার মতো সংগঠন গড়ে তুলতে পারেনি। আশ্রয় পাবেন ভেবে যাঁরা গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন, তাঁদেরও অনেকের মোহভঙ্গ হয়েছে। এই পরিস্থিতিই কাজে লাগিয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ফেরাতে চাইছেন ফ ব নেতৃত্ব। নরেনবাবুর কথায়, ‘‘এক শ্রেণির কর্মী-সমর্থক থাকেন, তাঁরা যে কোনও সরকারের আমলেই আখের গোছাতে চান। সেই অংশটা ফিরবে না। বাকিদের জন্য চেষ্টা করব।’’
পুরনোদের দলে টানতে হলেও সংগঠনকে চাঙ্গা থাকতে হবে। তার জন্য রাস্তায় নামতে হবে। যুব লিগের পাশাপাশি ফ ব-তেও এখন তার প্রস্তুতি চলছে। আগামী ১৭-১৮ এপ্রিল তাদের প্রথম পরীক্ষা। রাজ্য কাউন্সিলের পরে দলের নতুন রাজ্য কমিটির বৈঠক হয়েছে রবিবার। সেখানে ঠিক হয়েছে, নারদ-সহ দুর্নীতির ঘটনায় অভিযুক্ত নেতা-মন্ত্রীদের শাস্তির দাবিতে ১৭-১৮ তারিখ আইন অমান্য হবে। আগে বলা হয়েছিল, গ্রেফতার হলে দলের নেতা-কর্মীরা কেউ ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নেবেন না।