—প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রায়শই অভিযোগ করা হয়, অনুপ্রবেশকারীরা সহজেই নতুন রেশন কার্ড পেয়ে যাচ্ছেন বাংলায়। কিংবা এমনও বলা হয় যে, ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল করতে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করছে না রাজ্য সরকার। এমনই সব অভিযোগের চিরস্থায়ী জবাব দিতে পদক্ষেপ করল রাজ্য খাদ্য দফতর। নতুন রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করতে আধার কার্ড নম্বর দেওয়া বাধ্যতামূলক করল তারা। সম্প্রতি এমনই পদক্ষেপ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। এ বার থেকে নতুন কার্ডের আবেদন করতে গেলে আবেদনপত্রের সঙ্গে দিতে হবে আধার কার্ডের প্রতিলিপি। খাদ্য দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নতুন রেশন কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল করতে সক্রিয় হয়েছে খাদ্য দফতর। এই কাজে নেমে দেখা গিয়েছে, এক ব্যক্তির নামে একাধিক রেশন কার্ড রয়েছে। বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগ নেই। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ঠিকানায় একাধিক রেশন কার্ড রয়েছে এক জন ব্যক্তির।
সাম্প্রতিক খাদ্য দফতরের এক পর্যালোচনা বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। এই বৈঠকেই ঠিক করা হয়েছে, এ বার থেকে নতুন কোনও রেশন কার্ডের আবেদন করতে গেলে আধার কার্ডের প্রতিলিপি জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হবে। তবে একটি ক্ষেত্রে এ বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলেই খাদ্য দফতর সূত্রে খবর। এক থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে থাকা শিশুদের নতুন রেশন কার্ড তৈরি করার ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর হবে না। সে ক্ষেত্রে শিশুর জন্মের শংসাপত্র দেখিয়েই অভিভাবকেরা শিশুদের রেশন কার্ড তৈরি করতে পারবেন। তবে পাঁচ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স হয়ে গেলেই রেশন কার্ড আপডেট করার সময় আধার কার্ডে প্রতিলিপি জমা দিতে হবে।
খাদ্য দফতরের সূত্রে খবর, এক নামে একাধিক রেশন কার্ড ধরা পড়ার পরেই তা ব্লক করার কাজ শুরু করে দিয়েছে খাদ্য দফতর। এই কাজ করতে খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। তাই ঠিক করা হয়েছে, এখন থেকে কোনও ব্যক্তি রেশন কার্ড তৈরি করতে হলে আধার কার্ড নম্বর তার সঙ্গে যুক্ত করা বাধ্যতামূলক হবে। খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, রেশন কার্ড তৈরির সময়ই যদি আধার কার্ডের নম্বরের সঙ্গে তা সংযুক্ত করে দেওয়া হয়, তা হলে খাদ্য দফতরের কাজে অনেক বেশি সুবিধা হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি অন্য কোন জায়গা থেকে রেশন কার্ড তৈরির আবেদন জানান, সে ক্ষেত্রেও বিষয়টি আবেদন প্রক্রিয়ার সময়েই ধরা পড়ে যাবে। এ ছাড়াও রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সরকার প্রায়শই অভিযোগ তোলে, পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে অনুপ্রবেশকারীরা সহজেই রেশন কার্ড তৈরি করে নেন। নতুন এই পদ্ধতি পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে, এই অভিযোগের বিরুদ্ধে যে রাজ্য সরকার সদর্থক পদক্ষেপ করেছে, সেই প্রমাণও দেওয়া যাবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।