একটি দুর্ঘটনা যেমন সচেতনতা বাড়িয়েছে, তেমন ডেকে এনেছে দুর্ভোগও। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ ফেরিঘাট ২২টি। হুগলির তেলেনিপাড়ায় দুর্ঘটনার পরে তার মধ্যে বন্ধ হয়েছে পাঁচটি ঘাট। পারাপার করানো ছাড়াও ফেরিঘাটগুলির উপরে রুজি নির্ভর করে ঘাটকর্মী, দোকানদার, অটো-টোটো ও রিকশাচালকদের।
তেলেনিপাড়ার দুর্ঘটনার পরেই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে প্রশাসনের কর্তারা সাফ জানান, পূর্ত দফতরের ফিট সার্টিফিকেট ছাড়া বাঁশ-কাঠের মাচা বা সাঁকোর কোনও ঘাট দিয়ে ফেরি চলাচল করবে না। তাই বন্ধ রয়েছে শ্যামনগর ঘাটও। তারও কিছু দিন পরে বানের তোড়ে ভেসে যায় ইছাপুর দেবীতলা ঘাটের সাঁকো। ব্যারাকপুরের মহকুমা শাসক পীযূষ গোস্বামীর নির্দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই ঘাটও। নড়বড়ে সাঁকোর জন্য গাড়ুলিয়ার কাঙালি ঘাট, ইছাপুরের নবাবগঞ্জ ঘাট ও টিটাগড়ের রাসমণি ঘাটের ফেরি চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।
একসঙ্গে পাঁচটি ঘাট বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রায় দেড়-দু’হাজার যাত্রী। একমাত্র শ্যামনগর ছাড়া বাকি সব ঘাট থেকেই স্টেশন বা বাস রাস্তা বেশ খানিকটা দূরে। যাত্রীদের স্টেশন বা বাসস্ট্যান্ড থেকে আনা-নেওয়ার উপরেই রোজগার হতো ওই অঞ্চলের অটো, টোটো ও রিকশাচালকদের। ফেরি পারাপার বন্ধ থাকায় তাঁদের মাথায় হাত। ব্যবসা কমেছে ঘাট লাগোয়া দোকানগুলিরও। যদিও যাত্রী-সুরক্ষার প্রশ্নে সবাই এককাট্টা।
রাসমণি ঘাটে যাওয়ার রাস্তায় খাবারের দোকান চালান অজিত সাউ। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যবসা অর্ধেক পড়ে গিয়েছে। প্রথম দিকে যাত্রীরা ফিরে যেতেন। এখন সবাই জেনে গিয়েছেন।’’ নবাবগঞ্জ ঘাট-ইছাপুর টোটোর রুটে যাত্রী কমে যাওয়ায় অনেক টোটো সরে গিয়েছে। রিকশাচালক অমিত দেবের কথায়, ‘‘ঘাটের যাত্রীরা ছিলেন আয়ের ভরসা। সারা দিনে এখন তেমন ভাড়া মেলে না।’’
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ফেরি ঘাট চালু হবে ঠিকই। তবে কবে, এখনই বলা সম্ভব নয়।’’