শনিবার পানিহাটি পুরসভার সব কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে ফিরহাদ হাকিম এবং সৌগত রায়। —ফাইল চিত্র।
গত দেড় বছর ধরে পানিহাটি পুরসভার পরিষেবা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। যে কারণে রাজ্য পুর ও নগোরন্নয়ন দফতর তো বটেই, রাজনৈতিক ভাবেও বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে শাসকদল তৃণমূলকে। শনিবার পুর পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের সমাধান করতে পানিহাটি পুরসভাতেই এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে এই বৈঠকে যোগদান করেন দমদমের সাংসদ সৌগত রায় ও পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ। বৈঠকে ছিলেন পানিহাটি পুরসভার সব কাউন্সিলররাও।
পানিহাটি পুরসভা সূত্রে খবর, বৈঠকে মূলত কী কী বিষয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা জানতে চান পুরমন্ত্রী। কাউন্সিলররা জানান, পুরসভার অন্তর্গত একটি বৃহৎ এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে দীর্ঘ কয়েক মাস। মূলত ৮, ১১, ১৬, ১৭, ২২, ২৮, ৩২, ৩৩, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডগুলিতে পানীয় জলের সমস্যার সবচেয়ে বেশি। আবার তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সেপ্টিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার পরিষেবা। টিটাগড় ও ব্যারাকপুর পুরসভা থেকে পুরকর্মীরা এসে এই কাজ করে দিয়ে যান। অর্থের অভাবে সেই পরিকাঠামো ভেঙে পড়াতেই প্রতিবেশী পুরসভাগুলির উপর নির্ভরশীল হতে হয়েছে পানিহাটি পুরসভাকে। এ ছাড়াও, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে পুর এলাকায় বাতিস্তম্ভ লাগানোর ব্যাপারে তিন কোটি টাকা বকেয়া রয়ে গিয়েছে। আবার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বহু পুরোনো একটি ভাগাড় রয়েছে। ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন ধরে পুরসভার কাছে ভাগাড়টি অন্যত্র সরানোর দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু সেই দাবি পূরণ করতে পারেনি পুরসভা। এ ক্ষেত্রেও অর্থের অভাবের কথাই জানা গিয়েছে বৈঠকে।
যাবতীয় সমস্যার কথা শুনে সব রকম আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন ফিরহাদ। তবে পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী এক মাসের মধ্যে স্তব্ধ হয়ে যাওয়া পরিষেবাগুলিকে শুরু করে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে পুরসভায় ডাকতে হবে পুরবোর্ডের বৈঠক। সেই বৈঠকে সাংসদ সৌগত ও বিধায়ক নির্মলকেও ডাকতে হবে। তবে বৈঠকে চেয়ারম্যান মলয় রায়ের বিদায়ের ইঙ্গিত মিলেছে বলেই মত বৈঠকে হাজির কাউন্সিলরদের। এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘বৈঠকে পুরসভার কাজ ব্যাহত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, চেয়ারম্যানের শারীরিক অবস্থা নিয়েও কথা হয়েছে। তাই আমরা ধরেই নিচ্ছি যে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে চেয়ারম্যান বদল করবে নেতৃত্ব।’’
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুরসভার ভোটের পর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মলয়কে চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কারণে পুর পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। পানিহাটি পুরসভা সূত্রে খবর, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তীর্থঙ্কর ঘোষ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সম্রাট চক্রবতী চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন।