এ বার ‘অধিনায়ক অভিষেক’ লেখা হলুদ পতাকার পাশে জুড়ল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া হোর্ডিং। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের সমর্থক গোষ্ঠী ‘ফ্যাম’-এর পক্ষ থেকে হলুদ পতাকায় ছেয়ে ফেলা হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতা। তাতে লেখা ‘অধিনায়ক অভিষেক’। এ বার রাতারাতি সেই পতাকার পাশেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সম্বলিত হোর্ডিং ঝোলাল ‘ফ্যাম’। সেখানে লেখা রয়েছে ‘সর্বাধিনায়িকা জয় হে।’
অর্থাৎ অভিষেক অধিনায়ক। এবং মমতা সর্বাধিনায়িকা।
‘ফ্যাম’-এর ওই পতাকা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই জল্পনা তৈরি হয়। দলের সর্বোচ্চ স্তরের সমীকরণ, ‘দূরত্ব’, ‘নৈকট্য’ নিয়ে আলোচনা নতুন করে উস্কে দিয়েছিল হলুদ পতাকা। কিন্তু, রাতারাতি সেই হলুদ পতাকার পাশেই মমতাকে সর্বাধিনায়িকা সম্বোধন করে হোর্ডিং লাগানো হয়েছে।
‘ফ্যাম’-এর অন্যতম সংগঠক সৌরভ দাস বলেন, ‘‘তৃণমূল তো বটেই, আমরাই সমাজমাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড় সমর্থক কমিউনিটি। আমরা দাদা আর দিদিকে পৃথক করে দেখি না। ফলে অহেতুক বিতর্ক হচ্ছে।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘আমাদের এই সমর্থক সংগঠনে কেউ সর্ব ক্ষণের কর্মী নন। প্রত্যেকে নিজের কর্মস্থলের ব্যস্ততা সামলে সবটা করেন। প্রথম দিন আমরা হলুদ পতাকা লাগিয়েছিলাম। পরের দিন দিদির ছবি দেওয়া হোর্ডিং লাগানো হয়েছে।’’
সৌরভ এ কথা বললেও বিতর্ক স্তিমিত হচ্ছে না। দলের এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘সদিচ্ছা থাকলে তো সর্বাধিনায়িকার হোর্ডিং আগে ঝোলানো হত। অধিনায়ক লেখা পতাকা তার পরে টাঙানো যেতে পারত। কিন্তু হয়েছে ঠিক উল্টোটা।’’ ওই হলুদ পতাকার পাশে তণমূলের দলীয় পতাকাও লাগানো হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায়।
সমর্থকদের এই মঞ্চের পক্ষ থেকে রবিবার গাঙ্গুলিবাগানের কলতান কমিউনিটি হলে অনুষ্ঠিত হবে তাদের ‘রণকৌশল’ বৈঠক। কেন সেই বৈঠক? কিসের রণকৌশল? সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৈঠক হবে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে সমাজমাধ্যমে প্রচারের রূপরেখা ঠিক করতে। সেই হোর্ডিংয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের পাশাপাশি সর্বময় নেত্রী মমতার ছবি রয়েছে।
গত শনিবার ভোটার তালিকা নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছিলেন অভিষেক। যে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন সাংসদ, বিধায়ক, জেলা সভাপতি থেকে দলের সর্ব স্তরের প্রায় সাড়ে চার হাজার নেতা-নেত্রী। সেই বৈঠকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, মমতা অভিষেককে জায়গা ছেড়েছেন। যার ফলে অভিষেকও নতুন করে সক্রিয় হয়েছেন। এর পর গত বৃহস্পতিবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মমতা এ-ও জানিয়েছেন, তাঁর লন্ডন সফরের সময় দলের কাজ দেখবেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং অভিষেক। অভিষেক সেই জায়গা পাওয়ার পরেই রাস্তায় নেমে নতুন করে উদ্যম প্রদর্শন করে তাঁকে ‘অধিনায়ক’ অভিহিত করে সমর্থক গোষ্ঠী। তা নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পরেই মমতার ছবি দিয়ে লেখা হল ‘সর্বাধিনায়িকা জয় হে’।