সরকারি প্রকল্পে অনীহা শবরদের, তাঁদের মতো করে বোঝাতে চায় রাজ্য

এই অবস্থায় সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে শবরদের আগ্রহী করে তুলতে উদ্যোগী হচ্ছে নবান্ন। তাঁদের মতো করে প্রকল্পের সুবিধা বোঝানোর জন্য তৈরি হচ্ছে পরিকল্পনার রূপরেখা।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য ও প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩৮
Share:

শবর গ্রাম। ফাইল চিত্র।

সরকারি প্রকল্প আছে বিস্তর। কিন্তু তার সুযোগ নিতে শবরদের অনীহাও যথেষ্ট বলে দাবি প্রশাসনিক মহলের। এই অবস্থায় সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে শবরদের আগ্রহী করে তুলতে উদ্যোগী হচ্ছে নবান্ন। তাঁদের মতো করে প্রকল্পের সুবিধা বোঝানোর জন্য তৈরি হচ্ছে পরিকল্পনার রূপরেখা।

Advertisement

শবরদের নিয়ে সম্প্রতি একটি সমীক্ষা করিয়েছে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতর। সূত্রের দাবি, সচেতন ভাবেই সমীক্ষক দলে নৃতত্ত্ব গবেষকদেরও রাখা হয়েছিল। তাঁদের প্রস্তাবগুলি বিবেচনা করে সামগ্রিক রূপরেখা তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। তার পর জেলাশাসকের মাধ্যমে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা হবে। সঙ্গে জোর দেওয়া হবে প্রচার এবং সচেতনতা বৃদ্ধির কাজেও।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, শবররা নিজেদের গণ্ডির মধ্যেই থাকতে পছন্দ করেন। তাঁদের ভাবনাচিন্তা, জীবনধারণ কিছুটা হলেও ভিন্ন। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই তাঁদের সরকারি প্রকল্পগুলির সুফল বোঝানো প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা চাইছেন, জীবিকার জন্য ওষধি গাছ লাগানো, দড়ি তৈরি বা বাঁশের কাজকর্ম— ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকারি যে সুযোগ-সুবিধাগুলি রয়েছে, তা বেশি করে প্রচার করা হোক। দুই, শবরদের জীবনধারণের প্রশ্নে আরও বেশি করে কী ভাবে সহযোগিতা করা সম্ভব সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হোক। তিন, খাদ্য-চিকিৎসার বিষয়ে সরকারি উদ্যোগ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত ভাবে জানানো হোক।

Advertisement

অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শবরদের মানসিকতা অনুযায়ীই শবরদের সরকারি প্রকল্পের সুফল বোঝাতে হবে। কারণ, তাঁরা নিজেদের মতো করে থাকতেই পছন্দ করেন। ফলে সাধারণ ভাবে যে ভাষায় প্রচার করা হয়, তা তাদের আকৃষ্ট করবে, এমন নয়।’’ তবে এই কাজ করতে গিয়ে শবরদের চালু প্রথা বা ভাবাবেগ যাতে কোনও ভাবেই আঘাত না পায় সে ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক থাকতে চায় রাজ্য প্রশাসন। দফতরের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওদের (শবর) জন্য সব সময় চিন্তাভাবনা হচ্ছে। এটা ধারাবাহিক কাজ। আমরা সব জায়গাতেই এটা করি। প্রত্যেকের জন্য আলাদা করে সব জায়গাতেই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’’

সরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির সম্পাদক বলাইচন্দ্র নায়েক বলেন, ‘‘অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের অভাব আছে। তবে তার চেয়েও বড় অভাব শিক্ষার। সরকারের উচিত লোধা সেলকে সক্রিয় করা। তা হলে সমস্যার কথা সরকারের কানে পৌঁছবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement