উদ্বিগ্ন শেয়ার বাজারও

হচ্ছেটা কী, ব্যাখ্যা তলব পিনকনের

তলবি চিঠি পেয়ে তড়িঘড়ি একটা ব্যাখ্যা পাঠিয়েও দিয়েছে পিনকন। ওই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, তাদের চেয়ারম্যান মনোরঞ্জনের বিরুদ্ধে তোলা যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন। পিনকনের এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর অরূপ ঠাকুর চিঠি দিয়ে এ কথা জানান বিএসই এবং এনএসই বা ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জকে।

Advertisement

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৮
Share:

আগেই ধস নেমেছিল পিনকন স্পিরিট লিমিটেডের শেয়ারের দরে। এ বার শেয়ার বাজারের, বিশেষ করে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ বা বিএসই-র প্রশ্নের মুখে পড়ল পিনকন। ওই সংস্থার চেয়ারম্যান মনোরঞ্জন রায় গ্রেফতার হলেন কেন? সেই গ্রেফতারির খবর তাদের জানানোই বা হয়নি কেন? এই বিষয়ে পিনকনের ব্যাখ্যা তলব করেছে বিএসই।

Advertisement

তলবি চিঠি পেয়ে তড়িঘড়ি একটা ব্যাখ্যা পাঠিয়েও দিয়েছে পিনকন। ওই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, তাদের চেয়ারম্যান মনোরঞ্জনের বিরুদ্ধে তোলা যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন। পিনকনের এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর অরূপ ঠাকুর চিঠি দিয়ে এ কথা জানান বিএসই এবং এনএসই বা ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জকে।

রাজস্থান পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) গত ২ নভেম্বর মনোরঞ্জনকে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে। একই সঙ্গে তদন্তকারীদের হাতে ধরা পড়েন পিনকনের অন্য তিন তাবড় কর্তা। রাজস্থান পুলিশ সূত্রের দাবি, রাজস্থান-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধ লগ্নি সংস্থার শতাধিক শাখা অফিস খুলে চোখধাঁধানো হারে সুদের টোপ দিয়ে লাখ তিনেক মানুষের কাছ থেকে বেআইনি ভাবে অন্তত ১৬০০ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। আর সেই টাকার একাংশ ঢুকেছে পিনকন স্পিরিট লিমিটেডের মদের ব্যবসায়। এই অভিযোগ ওঠার পরেই ৬ নভেম্বর পিনকনের কাছে বিষয়টির ব্যাখ্যা চায় বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ।

Advertisement

পিনকনের উচ্চপদস্থ কর্তারা অবশ্য রাজস্থান পুলিশের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। ‘‘আমরা পুরো বিষয়টির উপরে নজর রেখেছি। তবে একটি বিষয়ে আমরা নিশ্চিত যে, বেআইনি কোনও অর্থই পিনকনের ব্যবসায় লগ্নি করা হয়নি,’’ বলেন পিনকনের এক কর্তা।

পিনকন ‘সিকিওরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া’ বা সেবি এবং বম্বে ও ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকভুক্ত সংস্থা। বেআইনি ভাবে লগ্নির টাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোনও সংস্থায় লগ্নি করার অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে সেই তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ পড়তে পারে। অর্থাৎ অবৈধ ভাবে তোলা টাকা মদের ব্যবসায় বিনিয়োগের অভিযোগ প্রমাণিত হলে পিনকনকে তাদের তালিকা থেকে বাদ দিতে পারে বিএসই এবং এনএসই। সে-ক্ষেত্রে সংস্থার ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাবে। পিনকনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে পারে সেবি এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াও। সেই জন্যই পিনকন অতি দ্রুত বিএসই-র যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাজস্থান পুলিশের হাতে মনোরঞ্জনের ধরা পড়ার খবর ছড়িয়ে প়ড়তেই পিনকনের শেয়ার বাজারে ধস নামে। তাদের শেয়ার বাজারদর ৭০ থেকে নেমে চলে যায় ৪৬-এর কাছাকাছি। স্বভাবতই নিজেদের ভাবমূর্তি ফেরানোর তাগিদ আছে পিনকনের। তবে পিনকনের ওই কর্তা বলেন, ‘‘শেয়ার বাজারে এমন ওঠানামা হামেশাই ঘটে। এই নিয়ে আমরা বিশেষ চিন্তিত নই।’’

বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের চিঠির উত্তরে অরূপ ঠাকুর বলেছেন, ‘‘মনোরঞ্জন রায় পুরোপুরি নির্দোষ। তাঁর বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’ তিনি জানান, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার পরে সংস্থার অন্য কর্তারা পুরো ঘটনার উপরে নজর রাখছেন। মনোরঞ্জনের গ্রেফতারের ঘটনা সংস্থার উৎপাদন ও অন্যান্য কাজের উপরে কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি বলেই দাবি করেছেন পিনকনের এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement