C V Ananda Bose

নির্বাচন পরবর্তী ‘সন্ত্রাস’ দেখতে রাজ্যে এসেছিলেন, শপথের আগেই নজরে বোসের ‘দৃষ্টিভঙ্গি’

বিধানসভা নির্বাচনের পরে গত বছর বিজেপির অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচন পরবর্তী ‘সন্ত্রাস’ সরেজমিনে দেখতে এসেছিল কেন্দ্রীয় তথ্যানুসন্ধান দল। সেই কেন্দ্রীয় দলে ছিলেন আনন্দ বোসও।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২২ ০৬:২১
Share:

সি ভি আনন্দ বোস। ছবি সংগৃহীত।

বাংলার নতুন রাজ্যপাল পদে সি ভি আনন্দ বোসের শপথ আজ, বুধবার। তিনি মঙ্গলবারই কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন। তবে সাম্প্রতিক কালে এটাই তাঁর বাংলায় প্রথম সফর নয়।

Advertisement

বিধানসভা নির্বাচনের পরে গত বছর বিজেপির অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচন পরবর্তী ‘সন্ত্রাস’ সরেজমিনে দেখতে এসেছিল কেন্দ্রীয় তথ্যানুসন্ধান দল। সেই কেন্দ্রীয় দলে ছিলেন কেরল ব্যাচের প্রাক্তন আইএএস অফিসার আনন্দ বোসও। বাংলার বিভিন্ন জেলায় ঘুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে সেই কেন্দ্রীয় দল যে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল, তার ছত্রে ছত্রে রাজ্য সরকার ও শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস সম্পর্কে অভিযোগ ছিল। সমালোচনা ছিল কঠোর ভাষায়। সেই দলের অন্যতম সদস্য বোসই এ বার বাংলার রাজ্যপাল পদে বসছেন। ফলে, তাঁর ‘রাজনৈতিক ভূমিকা’ ও তৃণমূল সম্পর্কে ‘দৃষ্টিভঙ্গি’ ইতিমধ্যেই চর্চায় এসে গিয়েছে।

তৃণমূল গত বছর বিধানসভা ভোটে বিপুল ভাবে জয়ী হওয়ার পরে বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা, খুন, ঘরছাড়া করা, মহিলাদের ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি-সহ ‘সন্ত্রাসে’র ভূরি ভূরি অভিযোগ করেছিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টে প্রায় সব অভিযোগকেই ‘মান্যতা’ দেওয়া হয়েছিল। দিল্লির একটি বেসরকারি সংস্থার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন বোস-সহ প্রাক্তন আইএসএস এবং আইপিএস অফিসারেরা। সেই সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ ছিল অসহযোগিতার। এমনকি, রাজ্য প্রশাসনের তরফে ওই সময়ে কেন্দ্রীয় দলকে বাংলা সফরে না আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল বলেও উল্লেখ ছিল রিপোর্টে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পাশাপাশি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশনেও। সেই কেন্দ্রীয় দলের সদস্য বোস যখন বাংলার রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন, তখন অদূরে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার পরের বছরেই লোকসভা ভোট। ফলে, এই সময়টাকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় দলের ওই রিপোর্টে ‘সন্ত্রাসের’ পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলার তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ভূমিকারও উল্লেখ ছিল। ধনখড় রাজ্যপাল থাকাকালীন রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁর সংঘাতের বৃত্তান্ত বহুচর্চিত। বোসের ‘রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি’ যে হেতু আগেই স্পষ্ট হয়েছে, তাই রাজ্যপাল হিসেবে তিনি কোন পথে যাবেন, সে দিকে নজর থাকবে রাজনৈতিক শিবিরের। বঙ্গে রাজ্যপাল পদে তাঁর নাম ঘোষণার পরে বোস অবশ্য বলেছেন, রাজ্য সরকার যাতে ‘সাংবিধানিক গণ্ডি’র মধ্যে থেকেই কাজ করে, সে দিকেই দৃষ্টি দেবেন তিনি। এবং রাজ্য সাংবিধানিক গণ্ডির মধ্যে থাকলে তিনিও সহযোগিতা করবেন। সেই সঙ্গেই বোসের মন্তব্য, রাজনৈতিক নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে তিনি কাজ করতে যাচ্ছেন।

সরকারি নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, রাজ্যপাল বোসকে আজ সকালে শপথ বাক্য পাঠ করানোর কথা কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা এবং অন্য অতিথিদের অনুষ্ঠানে থাকার কথা। বিমানবন্দরে এ দিন রাজ্যের তরফে নয়া রাজ্যপালকে স্বাগত জানিয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement