জমাটি দার্জিলিঙেই কি লুকিয়ে বিপদের বীজ

বছরভর এখন দার্জিলিং জমজমাট। এই জমজমাট দার্জিলিংই কি আগামী দিনে বিপদ ডেকে আনছে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে? পরিবেশবিদদের গবেষণার তথ্য থেকে এমন আশঙ্কা করা অমূলক নয়।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২২
Share:

রঙিন: পর্যটকদের ভিড় দার্জিলিং ম্যালে। ফাইল চিত্র

বছরভর এখন দার্জিলিং জমজমাট। এই জমজমাট দার্জিলিংই কি আগামী দিনে বিপদ ডেকে আনছে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে? পরিবেশবিদদের গবেষণার তথ্য থেকে এমন আশঙ্কা করা অমূলক নয়। তাঁরা বলছেন, দার্জিলিঙে দূষণ উত্তরোত্তর বাড়ছে। তার পিছনে অন্যতম দায়ী গাড়ির দূষণ এবং পর্যটকের বাড়বাড়ন্ত।

Advertisement

পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলছেন, পর্যটকের সংখ্যা দিন-দিন বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গাড়ি, হোটেল। সেই সব গাড়ির ধোঁয়া, হোটেলের রান্নাঘর থেকে কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে। বাতাসকে বিষিয়ে তুলছে সেই কার্বন। সেই দূষণের জের কেমন তা অবশ্য হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন মানুষজন। থেকে থেকেই কালো ধোঁয়াশার মতো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ। চট করে কাটছেও না সেই ধোঁয়াশা। গাড়ি চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন পোড়খাওয়া গাড়িচালকেরাও। তাঁদেরই এক জন পবন তামাঙ্গের কথায়, ‘‘আগে এমন হতো না। ইদানিং যত দিন যাচ্ছে, সমস্যা বাড়ছে।’’ ম্যালে ঘোরা লোকজনেরও আক্ষেপ কম নয়। চারপাশ কেমন যেন ঝাপসা হয়ে থাকছে। রোদ উঠলেও চট করে তা কাটছে না।

এর পিছনে শুধু গাড়ির ধোঁয়া নয়, বোস ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় জুড়ে দিচ্ছেন দার্জিলিঙের বাসিন্দাদের কিছু অভ্যাসকেও। এই জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে এখনও কাঠ, টায়ার পোড়ানোর রীতি রয়ে গিয়েছে। শীতকালে তা আরও বেড়ে যায়। সেই ধোঁয়াই সরাসরি মিশছে মেঘের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘এই কার্বন কণা মেঘের মধ্যে মিশলে তা সূর্যের তাপকে ধরে রাখে। ফলে মেঘ থেকে বৃষ্টি হয় না। বরং আকাশ মেঘে ঢেকে থাকে।’’

Advertisement

এ সবের পাশাপাশি উঠে এসেছে দার্জিলিঙের কংক্রিটের জঙ্গলে পরিণত হচ্ছে, তার কথাও। এলাকার কিছু বাসিন্দা এবং পরিবেশবিদদের কথা, পর্যটনের চাহিদা অনুযায়ী এমন করা হচ্ছে। কিন্তু এর কুপ্রভাবও পড়বে পাহাড়ের রানির উপরে। সে দিকে কেউ নজর দিচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, লোকের চাহিদা মেটাতে দার্জিলিঙের পরিবেশকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু এমনটা চলতে থাকলে আগামী প্রজন্মের জন্য পাহাড়ের রানির রূপ বজায় থাকবে তো?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement