Partha Chatterjee

আগে কমোড পেলেও এখন পান না! পাচ্ছেন না চেয়ারও! ব্যথায় কুপোকাত পার্থ আছেন মানসিক ‘কষ্টে’

পার্থের পরিচিত মহলের দাবি এবং বক্তব্য, জেলের ভিতর ‘অকথ্য অত্যাচার’-এর মুখোমুখি হতে হচ্ছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে। জেল সুপার তাঁকে বসার জন্য চেয়ার অবধি দিচ্ছেন না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৩ ১৯:৪৬
Share:
Ex-Education minister Partha Chatterjee is suffering from Mental and physical pain inside jail, said sources.

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর গত বছর থেকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি পার্থ। ফাইল চিত্র ।

জেলের ভিতর অসম্ভব অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁকে। গ্রেফতার হওয়ার পর জেল কর্তৃপক্ষ তাঁর শৌচকর্মের জন্য কমোডের ব্যবস্থা করলেও এখন সেই সুবিধা আর তাঁকে দেওয়া হয় না। হাঁটু মুড়ে শৌচকর্ম করার কারণে কোমরের পুরনো ব্যথাটাও চাগাড় দিয়ে উঠেছে! মুখোমুখি হতে হচ্ছে মানসিক অশান্তি-অত্যাচারেরও। ঘনিষ্ঠ মহলে নাকি এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর গত বছর থেকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি পার্থ। সোমবার মামলার শুনানির জন্য তাঁকে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। শুনানির শেষে সেখান থেকে বেরনোর সময় তিনি নিজেই সাংবাদিকদের জানান, জেলের ভিতরে থাকতে তাঁর অসম্ভব অসুবিধা হচ্ছে। যে ভাবে থাকার কথা তাঁর, সে ভাবে থাকতে পারছেন না তিনি। পার্থ বলেন, ‘‘অসম্ভব, অসম্ভব, অসম্ভব অসুবিধা হচ্ছে! জেলে যে ভাবে থাকার কথা, থাকতে পারছি না।” এইটুকু বলেই তিনি গাড়িতে উঠে যান। তার পর থেকেই জল্পনা উঠেছিল, কেন এমন কথা বলে গেলেন পার্থ! সংশোধনাগারে কোন কোন অসুবিধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে!

পার্থের পরিচিত মহলের দাবি এবং বক্তব্য, জেলের ভিতর ‘অকথ্য অত্যাচার’-এর মুখোমুখি হতে হচ্ছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে। জেল সুপার তাঁকে বসার জন্য চেয়ার অবধি দিচ্ছেন না। প্রথমে তাঁকে শৌচকর্মের জন্য কমোড দেওয়া হলেও এখন সেই সুবিধা ‘কেড়ে’ নেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁর কোমরের যন্ত্রণা বেড়েছে। মানসিক অত্যাচারও চালানো হচ্ছে তাঁর উপর! পার্থের ঘনিষ্ঠদের মতে, সেই অত্যাচারের কথাই সোমবার আদালত চত্বর থেকে বেরনোর সময় তাঁর মুখে ফুটে বেরিয়ে এসেছে।

Advertisement

অথচ সোমবার সকালে আদালতে ঢোকার সময় খোশমেজাজেই দেখা গিয়েছিল পার্থকে। রবীন্দ্রজয়ন্তীর আগের দিন আলিপুর আদালত চত্বরে গাড়ি থেকে নামার ঠিক মুখে ফুরফুরে মেজাজে নিজে থেকেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার তরী’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত কবিতার দু’লাইন শোনান তিনি। একগাল হেসে বলেন, ‘‘আমি শুধু একটা কবিতার লাইন বলব।’’ এর পেরই বলেন, ‘‘মসী লেপি দিল তবু ছবি ঢাকিল না, অগ্নি দিল তবুও তো গলিল না সোনা।’’

তবে পার্থের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ওই গালভরা হাসির পিছনে লুকিয়ে রয়েছে অনেক না বলা কথা। অনেক না জানাতে পারা মানসিক এবং শারীরিক কষ্টের উপাখ্যান। সকালে তিনি তা চেপে গেলেও বেরনোর সময় নাকি সেই ‘কষ্ট’ লুকিয়ে রাখতে পারেননি। পার্থর পরিচিত মহলের এমনটাও দাবি যে, জেলবন্দি পার্থ তাঁদের জানিয়েছেন, সংশোধনাগারের ভিতরে ‘স্বৈরাচারী ব্যবস্থা’ চলছে। যার ফলে তাঁর শরীর ভেঙে যাচ্ছে। মানসিক অশান্তিও বাড়ছে।

এর আগেও পার্থকে একাধিক বার শারীরিক অসুস্থতার কথা বলতে শোনা গিয়েছিল। নিয়মের বাইরে গিয়ে সংশোধনাগারের ভিতরেও আংটি পরে থাকা নিয়ে বিচারকের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, শারীরিক সমস্যার কারণে তিনি আংটিগুলি পরে আছেন। তাঁর আংটি পরা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ার পরে অবশ্য আংটি পরা ছেড়ে দিয়েছেন পার্থ। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, আংটি খুলে ফেলার কারণেই পার্থের মনে উচাটন ভাব বেড়েছে। সেই কারণেই তাঁর শরীর ভাল যাচ্ছে না। বাড়ছে মানসিক অশান্তিও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement