আগামী ১৯ জানুয়ারি মমতার ডাকা ব্রিগেড সমাবেশেও হাজির থাকবেন চন্দ্রবাবু নায়ডু।—নিজস্ব চিত্র।
নবান্নে এসে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করলেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নায়ডু। আগামী ১৯ জানুয়ারি মমতার ডাকা ব্রিগেড সমাবেশেও হাজির থাকবেন তিনি। তবে চন্দ্রবাবুর উদ্যোগে ২২ নভেম্বর দিল্লিতে প্রস্তাবিত বিরোধী-মহাজোটের বৈঠকটি হচ্ছে না। কবে হবে, সেই দিনক্ষণও চূড়ান্ত হয়নি। আর নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বিরোধী জোটের নেতা কে হবেন, সেই প্রশ্নে চন্দ্রবাবুকে পাশে রেখেই মমতা জানিয়ে দেন, জোটের প্রত্যেক নেতারই সেই ‘মুখ’ হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। চন্দ্রবাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা যাঁরা রয়েছি, তাঁরা সকলেই রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদীর থেকে এগিয়ে। ফলে যে কেউ নেতৃত্ব দিতে পারেন।’’ মায়াবতীকেও বিরোধী জোটে আনার ‘চেষ্টা হচ্ছে’ বলে নায়ডু জানিয়েছেন।
এ দিন বিকেল ৪টে ২০ নাগাদ নবান্নে এসে পৌঁছন নায়ডু। মুখ্যমন্ত্রী নিজে তাঁকে স্বাগত জানান। বৈঠক চলে সওয়া এক ঘণ্টা। পরে টুইট করে চন্দ্রবাবুকে ধন্যবাদও জানান মমতা। দিল্লিতে ২২ নভেম্বর বিরোধী নেতাদের বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা যে খুবই কম, তেমন ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গিয়েছিল। তবু চন্দ্রবাবুর সঙ্গে মমতার আলোচনায় ফের সেই সম্ভাবনা তৈরি হয় কি না, নজর ছিল সে দিকেই। শেষ পর্যন্ত ‘না’-এর পাল্লাই ভারী হয়েছে। পরে নায়ডু বলেন, ‘‘কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ২২ নভেম্বরের বৈঠক পিছিয়ে দিচ্ছি। দিনক্ষণ পরে জানানো হবে। তবে লোকসভা অধিবেশনের আগেই সেই বৈঠক হবে।’’ লোকসভা অধিবেশন শুরু ১১ ডিসেম্বর। ওই দিনই পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল প্রকাশের কথা।
নবান্নের ১৪ তলায় বৈঠক সেরে মমতা এবং নায়ডু একসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তবে কথা বেশি বলেছেন চন্দ্রবাবুই। আর্থিক হাল, নোট বাতিল-পরবর্তী পরিস্থিতি, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, বেকারি থেকে শুরু করে সিবিআই, ইডি এবং আয়কর বিভাগকে দিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের ‘ভয়’ দেখানো— সব কিছু নিয়ে বলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বরিষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী হিসেবে আমার বা মমতাজির কিছু দায়িত্ব আছে। দেশকে বাঁচাতে হবে। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে। দেশের প্রতিষ্ঠানগুলি রক্ষা করতে হবে। আজ গণতন্ত্র বিপন্ন। তাই গণতান্ত্রিক বাধ্যবাধকতা থেকেই একজোট হচ্ছি।’’
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ে বকেয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব, বদলি অডিট-কর্তা
অভ্যর্থনা: নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও চন্দ্রবাবু নায়ডু। পিটিআই
নায়ডু বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশকে বাঁচানোর দায়িত্ব সিনিয়র নেতাদেরই নিতে হবে।’’ সেই প্রসঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘মমতাজি শুরু থেকেই লড়াই করেছেন। এখন যাঁরাই বিজেপির বিরোধী, তাঁদের সকলকে এক ছাতার তলায় আসতে হবে। রণকৌশল ঠিক করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: ছিটমহলে জমির মালিকানা দিতে ভূমি আইন সংশোধন
প্রশ্ন আসে, জোটের নেতা কে হবেন? প্রথমে উত্তর দেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘(বিরোধী দলগুলির) বৈঠকে যোগ দেওয়া সব নেতারই নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। এ সব এখনকার আলোচনার বিষয় নয়।’’ চন্দ্রবাবুও বলেন, ‘‘সবাই অভিজ্ঞ। যে কেউ নেতৃত্ব দিতে পারেন।’’ মমতা জানান, এর আগেও দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীবালের ডাকে বা কর্নাটকে সব দল এক হয়েছিল। এমন নয় যে এটাই প্রথম আলোচনা। দেশকে বিজেপির হাত থেকে বাঁচাতে আলোচনা আগেই শুরু হয়েছে। সব বিরোধী দল একজোট হয়েছে। সবাই একসঙ্গে লড়াই করবে।
ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।