প্রতীকী চিত্র।
সরকারি পরিকাঠামো ব্যবহার করে উদ্যোগপতিরা বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির পথে এগোতে পারবেন। সোমবার এই মর্মেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। বেসরকারি নার্সিং কলেজ তৈরির ব্যাপারেও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। এর জন্য তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য নির্দিষ্ট ভাড়াতেই ব্যবহার করা যাবে সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো।
গত ১০ বছরে রাজ্যে আটটি মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করেছে সরকার। হুগলির আরামবাগ, হাওড়ার উলুবেড়িয়া, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত, পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, ঝাড়গ্রাম এবং জলপাইগুড়িতে আরও ছ’টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরির কাজ চলছে। এ দিন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বলেন, “বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির নীতি আগেই অনুমোদিত হয়েছিল। অনেকে প্রস্তাবও দিয়ে রেখেছেন। এমনটা করা গেলে চিকিৎসক এবং চিকিৎসা পরিকাঠামোর বাড়তি সুবিধা রাজ্য পাবে। চিকিৎসকদের ঘাটতিও এড়ানো সম্ভব।”
গত ডিসেম্বরে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের নির্দেশিকা মেনেই ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, মেডিক্যাল কলেজ তৈরিতে আগ্রহী বেসরকারি সংস্থা এ বার থেকে সরকারি হাসপাতাল ভাড়া নিতে পারবে।
সাম্প্রতিক কালে দেখা গিয়েছিল, বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা মেডিক্যাল কলেজ তৈরিতে আগ্রহী হলেও নিয়মের বেড়াজালে তা আটকে যাচ্ছিল। কারণ, মেডিক্যাল কলেজ তৈরির ক্ষেত্রে অন্যতম শর্ত হল অন্তত দুই বছর কমপক্ষে ৩০০ বা তার বেশি শয্যার হাসপাতাল চালাতে হবে। আর সেই হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজটির মধ্যে যেন দূরত্ব হয় সর্বোচ্চ ১০ কিমি। নিয়মের এই মাপকাঠি পূরণ করতে না পারার ফলেই আর্থিক সঙ্গতি থাকলেও পিছিয়ে আসতে হচ্ছিল বেসরকারি সংস্থাগুলিকে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই জায়গাতেই উদ্যোগপতিদের সহযোগিতা করতে সরকারের এই পদক্ষেপ। যেখানে সরকারি হাসপাতাল ভাড়ায় নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির কাজ করতে পারবে বেসরকারি সংস্থা।
নবান্ন সূত্রের খবর, বেসরকারি সংস্থা কী কী সুবিধা হাসপাতাল থেকে নেবে, তার উপরেই স্থির হবে ভাড়া। যদিও সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা, পরিচালনার পুরো দায়িত্ব বা নিয়ন্ত্রণ রাজ্য সরকারের হাতেই থাকবে। বেসরকারি সংস্থাটির পড়ুয়ারা সেখানে শুধু পড়াশোনা ও হাতেকলমে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। আর এই পরিকাঠামো ব্যবহারের পাশাপাশি নিজেদের মেডিক্যাল কলেজ তৈরিও এগোতে পারবে ওই সংস্থা। ইতিমধ্যেই অনেকে এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন বলেও প্রশাসন সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, বোলপুর, রানাঘাট ও বিষ্ণুপুরে বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি হবে মেডিক্যাল কলেজ। পাশাপাশি, নার্সিং কলেজ তৈরির ক্ষেত্রেও ১০০ শয্যার হাসপাতাল থাকা জরুরি। সরকারের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রেও তাদের পরিকাঠামো ব্যবহার করতে পারবেন ইচ্ছুক উদ্যোগপতিরা। তাতেও সরকারের একই নিয়ম কার্যকর থাকবে।