Aroop Biswas

অ্যালকেমিস্ট মামলায় ইডি ডাকল তৃণমূলের কোষাধ্যক্ষ অরূপ বিশ্বাসকে, চিঠি দিয়ে সময় চাইলেন রাজ্যের মন্ত্রী

এর আগে মুকুলকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু শারীরিক কারণেই তিনি দিল্লি যেতে পারেননি। পরিবারের আবেদন মেনে গত সোমবার ইডি আধিকারিকেরা বাড়িতে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:১৯
Share:

অরূপকে তলব করল ইডি। —ফাইল চিত্র।

মুকুল রায়ের পর অ্যালকেমিস্ট মামলায় এ বার রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে তলব করল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ওই মামলায় প্রায় ১৯০০ কোটি টাকা আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছিল। তৃণমূলের কোষাধ্যক্ষ হিসাবেই অরূপকে তলব করা হয়েছে। মন্ত্রী সময় চেয়েছেন। তাঁর আবেদন বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই ইডির একটি সূত্রের দাবি।

Advertisement

এর আগে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুলকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু শারীরিক কারণেই তিনি দিল্লি যেতে পারেননি। পরিবারের আবেদন মেনে গত সোমবার ইডি আধিকারিকেরা মুকুলের কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ঘটনাচক্রে, তার পরেই অরূপকে তলব করা হল। তবে ইডি সূত্রে খবর, মন্ত্রী নয়, তৃণমূলের কোষাধ্যক্ষ হিসাবেই অরূপকে তলব করা হয়েছে। তৃণমূলের অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করতেই এই তলব। ২০১৪ সালের ভোটের প্রচারে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে অরূপের কাছে জানতে চাওয়া হতে পারে বলেই ওই সূত্রটির দাবি। বিষয়টি নিয়ে অরূপ প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের বক্তব্য তিনি ইডিকে জানিয়েছেন চিঠি দিয়ে।

অরূপের তলব নিয়ে বিজেপিকে বিঁধেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করছে বিজেপি।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘মিঠুন চক্রবর্তীকে কেন ধরা হবে না অ্যালকেমিস্ট মামলায়?’’

Advertisement

তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘আইনকে আইনের পথে চলতে দেওয়া উচিত। কোনও বক্তব্য থাকলে আদালতে যেতে পারে তারা।’’

অ্যালকেমিস্ট মামলায় আগেই গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ কেডি সিংহ। ইডি সূত্রে খবর, তাঁরই সংস্থা ছিল ‘অ্যালকেমিস্ট ইনফ্রা রিয়্যালটি’। সেই সংস্থার বিরুদ্ধে লগ্নিকারীদের কাছ থেকে বেআইনি ভাবে টাকা তোলার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। ইডি ২০১৬ সালে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ ছিল, সেবি-র অনুমতি ছাড়াই ওই সংস্থাটি লগ্নিকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা তুলেছে। তদন্তে নেমে ২০১৯ সালে কেডি-র কুফরির রিসর্ট, চণ্ডীগড়ের শো-রুম, হরিয়ানার পঞ্চকুলার সম্পত্তি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-সহ ২৩৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ইডি।

সেই ঘটনার ১৫-১৬ মাস পর ২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে কেডিকে গ্রেফতার করে ইডি। সেই সময় বিজেপিতে ছিলেন মুকুল। ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতে এসে কেডি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলেন, মুকুল বা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের মতো বিজেপি নেতারা তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে কী বলছেন? তত দিনে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ভোটের আগে কেডির গ্রেফতারি নিয়ে যখন বিজেপি শাসকদলকে লাগাতার বিঁধে চলছিল, সেই সময় তৃণমূলের তরফেও পাল্টা দাবি করা হয়েছিল যে, শুভেন্দু-মুকুলের কাছে ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থা সারদা এবং অ্যালকেমিস্টের সমস্ত খবর রয়েছে। গোটা বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং সিবিআইকে চিঠি দিয়েও জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল। লোকসভা ভোটের সেই মামলা নিয়ে আবার তৎপরতা শুরু হয়েছে। মুকুলের পর তৃণমূলের অরূপকে ডেকে পাঠাল তদন্তকারী সংস্থা।

ইডি সূত্রের খবর, অ্যালকেমিস্ট চিট ফান্ডের নথি ও হিসাব খতিয়ে দেখার সময় কিছু ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন মিলেছে। তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, চিটফান্ড সংক্রান্ত কাজের জন্য হয়নি সেই সব লেনদেন। ওই বিষয়ে জানতে চেয়েই অরূপকে তলব করা হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের ওই সূত্রটির।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement