—প্রতীকী ছবি।
শিক্ষা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল কোটি কোটি টাকার নোটের বান্ডিল। সেই শুরু। তার পর থেকে বিভিন্ন দুর্নীতির তদন্তে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সন্দেহভাজন বা অভিযুক্তের বাড়িতে কার্যত নিয়মিত মিলেছে নোটের পাহাড়। সম্প্রতি সেই তালিকায় নাম জুড়েছে কামারহাটি পুরসভায় কর্মরত এক অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের।
ইডি সূত্রের দাবি, গত ৫ অক্টোবর তমাল দত্ত নামে ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের বাগুইআটির অর্জুনপুরের ফ্ল্যাট থেকে নগদ ১৪ লক্ষ টাকা, আড়াই কিলো সোনা ও হিরের গয়না বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই গয়নার বাজারমূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। তা ছাড়া বিভিন্ন সম্পত্তির প্রায় ১৩০০ পাতার নথিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই সব নথিতে নামে-বেনামে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। এই সম্পত্তি তমালের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন বলেই দাবি তাঁদের।
এই সব নথিপত্র অতি সম্প্রতি দিল্লিতে ইডি-র সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত এলে এই নথি আদালতে জমা দেওয়া হবে বলেও ইডি সূত্রের দাবি। তমালের সঙ্গে এ দিন ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। মোবাইলে পাঠানো বার্তার জবাবও রাত পর্যন্ত আসেনি।
রাজ্যের প্রায় ৭০টি পুরসভায় পরই তমালকে সাসপেন্ড করা হয়।
রাজ্যের প্রায় ৭০টি পুরসভায় বিভিন্ন পদে বেআইনি ভাবে কর্মী নিয়োগের তদন্তে নেমেছে ইডি ও সিবিআই। সেই সূত্রেই অভিযান চালিয়েছিল ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থাটির সূত্রের দাবি, তমাল ২০১৬ সালে কামারহাটি পুরসভায় অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দিয়েছিলেন আর মাত্র ছ’বছরে তাঁর সম্পত্তি রকেটের গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।
নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত অয়ন শীলের মাধ্যমে পুর নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছিল বলে দাবি ইডি ও সিবিআইয়ের। ইডি এবং সিবিআই সূত্রের দাবি, শুধু কামারহাটি নয়, রাজ্যের প্রায় ৭০টি পুরসভার বেশ কয়েক জন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, আধিকারিক পুর নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।
তদন্তকারীদের দাবি, গত কয়েক বছরে কামারহাটি পুরসভায় প্রায় ৩০০-র বেশি বেআইনি নিয়োগ হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে তদন্তে উঠে এসেছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে তমালের জড়িত থাকার প্রমাণও পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি ইডি সূত্রের। ওই সূত্রের আরও দাবি, তমাল এবং অয়নের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং তমালের সঙ্গে একাধিক ‘প্রভাবশালী’রও যোগ রয়েছে বলে তদন্তে ইঙ্গিত মিলেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে, বালি পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার প্রণব অধিকারীর বাড়ির অন্দরমহল থেকে, উদ্ধার হয়েছিল কোটি কোটি টাকা নগদ ও সোনার গয়না। এমনকি, শৌচাগারে কমোডের পিছনের কাঠের বাক্সেও মেলে টাকার বান্ডিল।