রূপল কবিরাজের নিউটাউনের বাড়িতে ইডি হানা। নিজস্ব চিত্র
রোজভ্যালি তদন্তে গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুর বাড়ি-সহ আরও সাত জায়গায় হানা দিলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র গোয়েন্দারা। বৃহস্পতিবার দিনভর তাঁরা তল্লাশি চালান। ইডি সূত্রের খবর, রোজভ্যালি গোষ্ঠীর মালিকানাধীন স্বর্ণ বিপণি (অদ্রিজা)-র টাকার লেনদেন সংক্রান্ত কিছু নথির খোঁজেই এ দিন তল্লাশি চালায় তারা।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একটি দল প্রথমে যায় শুভ্রার সাউথ সিটির ফ্ল্যাটে। সেখানে তিনি ছিলেন না। জানা গিয়েছে, তাঁর পরিচারিকা গোয়েন্দাদের জানান যে, শুভ্রা কলকাতার বাইরে। ইডি কর্তাদের দাবি, এর মধ্যে শুভ্রাকে দু’বার তলব করা হয়েছিল ইডি দফতরে কিন্তু জেরা এড়িয়েছেন তিনি। তদন্তকারীদের দাবি, শুভ্রা অদ্রিজার ব্যবসা দেখবাল করতেন এবং রোজভ্যালির বিরুদ্ধে ইডি এবং সিবিআই তদন্ত শুরু করার পর গৌতমের নির্দেশে রোজভ্যালির প্রচুর সম্পত্তি এবং টাকা ঘুরপথে অদ্রিজাতে সরিয়ে দেওয়া হয়।
ওই সময়ে ইডি অদ্রিজার বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত করেনি। পরবর্তীতে প্রকাশ্যে আসে যে, রোজভ্যালি মামলায় ইডির তদন্তকারী আধিকারিক মনোজ কুমারের সঙ্গে শুভ্রার ঘনিষ্ঠ ‘বন্ধুত্ব’ রয়েছে। অভিযোগ ওঠে, ওই বন্ধুত্বের কারণেই ইডি সেই সময়ে অদ্রিজাকে তদন্তের পরিধির বাইরে রাখে। পরবর্তীতে ইডি থেকে অপসারণ করা হয় মনোজ কুমারকে।
আরও পড়ুন:প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পরামর্শদাতা কমিটিতে সাধ্বী প্রজ্ঞা, দেশবাসীর অপমান, তোপ কংগ্রেসের
আরও পড়ুন:মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শুক্রবার, জানাল কংগ্রেস
ইডির গোয়েন্দারা এ দিন রোজভ্যালির বিনোদন সংস্থা ব্যান্ডভ্যালু কমিউনিকেশনের অন্যতম শীর্ষ আধিকারিক রূপল কবিরাজের নিউটাউনের বাড়িতেও হানা দেয়। এর আগে রূপলকে বেশ কয়েক বার জেরা করেন গোয়েন্দারা। তদন্তে উঠে আসে রোজভ্যালির টাকা ঘুরপথে ঢুকেছে ওই সংস্থাতেও। ইডি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ব্র্যান্ড ভ্যালু কমিউনিকেশন-এর ব্যাবসাও দেখতেন শুভ্রা। পাশাপাশি গৌতম কুণ্ডু জেলবন্দি হওয়ার পর রোজভ্যালির বেশ কিছু বেনামী সম্পত্তি তছরুপ করার চেষ্টার পেছনেও রূপলের যোগ আছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে,এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন ইডির তদন্তাকারীরা। রূপলের সঙ্গে যোগাযোগের সূত্রেই এ দিন ইডির তল্লাশি হয় সুদীপ্ত রায়চৌধুরী নামে এক নির্মাণ ব্যাবসায়ীর বাইপাসের ধারে বাড়িতে। এর আগে গৌতম কুণ্ডুর বয়ানের ভিত্তিতেই সিবিআই গ্রেফতার করেছিল সুদীপ্ত রায়চৌধুরীকে। সিবিআই আধিকারিকদের গৌতম জানিয়েছিলেন, সিবিআই এবং ইডির মামলা তিনি সামলে দেবেন। তার বিনিময়ে ২ কোটি টাকা নিয়েছিলেন সুদীপ্ত। ওই লেনদেনে রূপলেরও যোগ পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
কলকাতার এই তিন জায়গায় তল্লাশির পাশাপাশি মালদহ জেলার তিন জায়গায় এবং হাওড়ার দুই জায়গায় হানা দেন গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, ওই দুই জেলাতেই বেনামে রোজভ্যালি গোষ্ঠীর কিছু সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে।